পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, যা জানাল ইরান ইসরায়েলি হামলায় ইরানের আরেক পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র করল বাংলাদেশ ‌জয় ইরানেরই হবে, স্পষ্টভাষায় জানালেন এরদোয়ান ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান বাংলাদেশের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকবে কি না সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের: ড. ইউনূস জয়েন্টের ব্যথা কমাতে কালিজিরা তেল আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না বাংলাদেশে চালু হচ্ছে গুগল পে জয়পুরহাটে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীর বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা লুট শেরপুরে নাগরিক প্লাটফর্ম সক্রিয়করণ বিষয়ক ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত অভয়নগরে নিখোঁজের একদিন পর ৪ বছরের শিশুর লাশ উদ্ধার ‎জাতীয় ফল মেলা ২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে সিরাজদিখানে মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ‎ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে চোরকে চিনে ফেলায় নৃশংসভাবে নারীকে হত্যা; ঘটনার ২০ ঘন্টার মধ্যে ক্লু-লেস এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন মধুপুরে বিএনপি'র কর্মী সভা অনুষ্ঠিত ঘাটাইলে বৃদ্ধ মহিলাকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার লুট বেগমগঞ্জে চুরি করতে এসে নারীকে জবাই করে হত্যা,গ্রেপ্তার-২ কিশোর নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার টাঙ্গাইল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শামীম, মহব্বত সাধারণ সম্পাদক অন্তর্বর্তী সরকার ভালো কাজ করছে, ঐক্যবদ্ধভাবে পাশে থাকব: ফখরুল

পটুয়াখালী গলাচিপায় এসএসসির ব্যবহারিকে টাকা আদায়ের অভিযোগ

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য ‍টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, বিদ্যালয়গুলোতে সারা বছর তেমন কোনো ব্যবহারিক ক্লাস হয় না। কিন্তু পরীক্ষার সময় ‘পরীক্ষকদের জন্য খরচা আছে’ এমন কথা বলে এই টাকা নেয়া হয়। বলা হয়, টাকা দিলে বেশি নম্বর দেয়া হবে না। বিজ্ঞান, আইসিটি, কৃষি, কারিগরি সবক্ষেত্রেই যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা আছে সবগুলোর জন্যই টাকা দিতে হয়েছে। 

গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ভালো নম্বর দেওয়ার কথা বলে ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞান বিভাগে ১১১০ টাকা এবং ব্যবসায়ী শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের জন্য ৫১০ টাকা করে নিয়েছেন শিক্ষকেরা। 

তারা জানান, রসায়ন, পদার্থ বিজ্ঞান,  জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিতের জন্য বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষককে ৮০০ টাকা, আইসিটির জন্য ওই শিক্ষক ২০০ টাকা এবং কৃষি শিক্ষা ও শারীরিক শিক্ষা জন্য কৃষি শিক্ষক ৩১০ টাকা নিয়েছেন। 

বিজ্ঞান বিভাগের ১১৬ জন শিক্ষার্থীর কাছে থেকে মোট এক লাখ ২৮ হাজার ৭৬০ টাকা, মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষায় মোট ৫৬ শিক্ষার্থীর কাছে থেকে ৫১০ টাকা করে ২৮ হাজার ৫৬০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষায় কেন্দ্রের সকল শিক্ষার্থীদের কাছে অনলাইন চার্জ বলে প্রতি বিষয় ১০ টাকা করে মোট ৩৮ হাজার ৮০০ টাকা ওঠানো হয়েছে। 

এই বিদ্যালয়ের ১৫ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিবেদক। তাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ব্যবহারিক পরীক্ষার আগে এভাবে টাকা ওঠানো এক রকম নিয়মে পরিণত হয়েছে। এটা তো পুরোপুরি ঘুষ। কিন্তু কিছুই বলার নেই।

এক অভিভাবক বলেন, তিনি বহু কষ্টে ছেলেকে পড়াচ্ছেন। ছেলের কাছ থেকেও এই টাকা চাওয়া হয়েছিল। পরে অনেক অনুরোধ করার পর মাফ পেয়েছেন।  

বিজ্ঞান বিভাগের একাধিক অবিভাবক বলেন, আমরা জিম্মি, কিছু করার নাই। টাকা না দিলে ব্যবহারিকের নম্বর কমিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি স্কুলে বিজ্ঞান এবং আইসিটি ল্যাব আছে, কিন্তু কোনো দিন ব্যবহারীক ক্লাস হয় না এবং শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। বিগত দিনে যারা এ বিষয়ে কথা বলছেন তাদের বাচ্চারা খারাপ রেজাল্ট করছে।  ব্যবহারিক মার্ক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।   

এই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এই টাকা স্কুল তহবিল বা সব শিক্ষককে ভাগ করে দেয়া হয় না। বিষয়ভিত্তিক কয়েকজন শিক্ষক আর প্রধানশিক্ষক এগুলো ভাগ করে নেন। এটা একেবারেই ওপেন সিক্রেট বিষয়। 

এই শিক্ষকরা আরও বলেন, শুধু এই টাকা নয়, ভর্তি থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের মসজিদ নির্মাণের নামেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। যার কোনো হিসেব কখনও দেয়া হয় না। এটি প্রধান শিক্ষক একাই ভোগ করেন। বিদ্যালয়ে নিরপেক্ষ অডিট হলে তা বের হবে বলে মনে করেন তারা। 

গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মু. নিজাম উদ্দিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অন্য শিক্ষকরা টাকা উঠাচ্ছেন কিনা তা জেনে পরে জানাবেন। কিন্তু আর কিছুই জানাননি। 

শুধু গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় নয়, শহরের গলাচিপা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়েও একই অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

গলাচিপা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা জানান, এসএসসি পরীক্ষার নিবন্ধনের সময়  শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারণ করে দেয়া ফি দিয়ে পরীক্ষার্থী ফরম পুরণ করে। পরে ব্যবহারীক পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নাই। যদি কোনো শিক্ষক করে থাকেন তবে তা অন্যায় এবং চরম অনৈতিক কাজ। এটি ঘুষের শামিল। কোনো অবিভাবক আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্বাস উদ্দিন বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষায় এভাবে টাকা নেয়ার কোনো বিধান নাই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা আইনি  ব্যবস্থা নেবো।