ঢাকায় বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস গুম প্রতিরোধে এক মাসের মধ্যে আইন, গঠিত হচ্ছে শক্তিশালী কমিশন সাতক্ষীরায় জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সভা তাণ্ডবে পাইরেসির হানা ট্রাক মালিককে হয়রানির অভিযোগে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে মোংলায় বাস যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থেকে মুল্যবান কষ্টিপাথরের বিষ্ণু মূর্তিসহ ০২ জন গ্রেপ্তার নড়িয়ায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন জয়পুরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত-১, শিশুসহ আহত ৫ নোয়াখালীতে এসিড নিক্ষেপের ভয় দেখায় জোরপূর্বক দর্শন গ্রেপ্তার ১ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ইসরায়েলে নতুন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান কাছের মানুষকে আলিঙ্গন করা কেন জরুরি? একদিনে আরও ২৬ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত্যু ১ পাল্টা হামলার মুখে যাত্রী ছাড়াই বিদেশে বিমান সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সমাঝোতা একটি ইতিবাচক দিক : আতিকুর রহমান জামায়াতের ১নং ওয়ার্ড কর্তৃক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নাগেশ্বরীতে বাণিজ্যমেলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন রায়গঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু

অর্থনৈতিক মুক্তির অগ্রযাত্রায় সর্বজনীন পেনশন স্কীম


ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ উন্নত দেশে হিসেবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম এ বার্তাই দিচ্ছে এ দেশের জনগণকে। সমালোচনা থাকবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু দিন শেষে স্বপ্ন যদি সঠিক হয় তাহলে সফলতা আসবে এ কথা চিরসত্য। বর্তমান সময়ের আলোচিত একটি পদক্ষেপ হলো সার্বজনীন পেনশন স্কীম। যারা কেবল মাত্র বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে তাদের মুখটা অন্ততপক্ষে এবিষয়ের বন্ধ রাখাই বাঞ্চনীয় মনে হয় নতুবা নীতি পরিহার করে এর পক্ষে কথা বলা উচিত বলেই মনে হয়। বিশেষ করে মানুষ যেন স্বাভাবিক একটা সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে পারে তার পক্ষেই অবস্থান হওয়া উচিত। বিশেষ করে বেসরকারি চাকুরিজীবী ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এ কর্মসূচি নতুন বার্তা বয়ে এনেছে। এর পাশাপাশি যারা প্রবাসে বসবাস করেন তাদের জন্যও এটি ভালো খবর। তবে শুধু দুটি পক্ষই নয় সব শ্রেণির মানুষই এর আওতায় আসবে বলে মনে হয় । আর এ কারণে এ কর্মসূচির একেকটি স্কিমের একেক নামকরণ করা হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য ‘প্রগতি’ স্কিম, প্রবাসীদের জন্য ‘প্রবাস’ স্কিম, ‘সমতা’ স্কিমে রয়েছে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী আয়ের ব্যক্তিরা, ‘সুরক্ষা’ স্কিমে রয়েছে কৃষক থেকে শুরু করে রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, জেলে, তাঁতি প্রভৃতি পেশার লোকজন। এই বেষ্টনি না থাকার কারনে এতদিন প্রবীণরা খুবই অবহেলার মধ্যে ছিলেন। এখন এ পেনশন স্কিমের আওতায় এসে তাদের জীবন যেমন একদিকে উন্নত হবে, তেমনি হবে আত্মনির্ভরশীল। সময়ের প্রয়োজনে এসব বিষয় বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি ছিল। এ সব স্কীম চালুর ফলে মানুষের মাঝে মোটামুটিভাবে সাড়া পড়েছে বলেই মনে হয় তবে এটি বাস্তবায়ন বা লক্ষ্য অর্জনের জন্য আরো বহু পথ দূরে যেতে হবে। সময় চলে যাবে অনেক দূর তাই এই স্কীম বাস্তবায়নে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সঠিকভাবে। স্কীমটি বাস্তবায়নের জন্য যে কয়েকটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন সে বিষয়ের উপর আলোকপাত করা একান্ত প্রয়োজন। আলোচনায় যে বিষয়গুলো আসেনি বা অস্পষ্ট রয়েছে যেগুলি থেকে জনসাধারণের বিভ্রান্তি দূর করতে হবে। প্রথমত জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। আর এ আস্থা অর্জনের জন্য সরকারকে বিভিন্নমুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সরকারকে সাধারণ মানুষের নিকট বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে এবং এ জায়গায় বিনিয়োগ করলে তার বিনিয়োগ নষ্ট হবে না এব্যাপারে জনসাধারণের মনে একটি স্বচ্ছ ধারণা গড়ে উঠতে হবে। বিশেষ করে গ্রামের ও শ্রমজীবি মানুষের মাঝে এ সম্পর্কে পজেটিভ ধারণা গড়ে তুলতে হবে। এ স্বীম থেকে বিনিয়োগকারীরা কি পরিমাণ লাভবান হবে তার ধারণা থাকা জরুরি। সবচেয়ে বড় কথা হলো আর্থিক বিনিয়োগের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধান সরকারের দায়িত্ব। যত আইনই আমরা তৈরি করি না কেন যাদের জন্য আইন তৈরি করা হবে তাদের সুবিধার অগ্রাধিকার দিতে হবে। এমনিতেই সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের প্রতি দেশের বেশির ভাগ মানুষেরই ভালো ধারণা জন্ম নেয় না। এই স্কীমে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারকে বিনিয়োগকারীদের পক্ষে একটি সুন্দর পরিবেশের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। দ্বিতীয়ত এ স্কীমের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোন প্রকার রেগুলেটরি সংস্থা এখনও গঠন করা হয়নি। এ কাজের জন্য একটি শক্তিশালী রেগুলেটরি সংস্থা গঠন প্রয়োজন তা নাহলে সাধারণ মানুষের মাঝে আস্থা বৃদ্ধি পাবে না। মানুষ যেন তাদের লেদদেন কার্যক্রম দ্রুত এবং হয়রানিমুক্তভাবে করতে পারে এজন্য নির্দিষ্ট একটি সংস্থার মাধ্যমে এটি পরিচালনা করা যেতে পারে। যেহেতু শুরুতেই এর সাড়া ভালো পাওয়া যাচ্ছে তাই দ্রত পদক্ষেপ নিলে সফল হওয়া সম্ভব। তৃতীয়ত এর জন্য প্রয়োজন সাধারণ মানুষের মাঝে সঠিক প্রচারণা। সাধারণ মানুষকে এ সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা দিতে হবে। এ স্কীমে নাম লেখালে কি লাভ সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে একটি ভালো ধারণার জন্ম দিতে হবে। কারা কখন কোন জায়গায় কিভাবে বিনিয়োগ করবে এবং কিভাবে এ থেকে সুবিধা পাবে এবং এ বিনিয়োগের নিশ্চয়তা সম্পর্কে প্রচারণা চালাতে হবে। আমাদের দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী বাস করে গ্রাম এলাকায়। দেশেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে গ্রামের উন্নয়ন ছাড়া সামনে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই গ্রামের মানুষের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন। গ্রামের মানুষের হাতে নগদ অর্থ থাকার পরও সময় সুযোগের অভাবে সঞ্চয় প্রবণতা গড়ে উঠেনি। এ সঞ্চয় আমাদের জীবনের শেষ সময়ে আমাদেরকে একটি ভালো সাপোর্ট দিবে এ বিষয়টি সম্পর্কেও প্রচারণার প্রয়োজন রয়েছে। চতুর্থত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দিকে নজরটা বেশি দিতে হবে। বিদেশ থেকে নিজের নামে সহজেই যেন বিনিয়োগ করতে পারে সে ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। হয়রানির বিষয়ের প্রতি যারা পরিচালনা করবে তাদের সজাগ থাকতে হবে। সকলের ভালো মনের প্রয়াসে এ চিন্তার বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাকে সাধুবাদ জানানো প্রয়োজন তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে এ থেকে পিছপা হওয়ার সুযোগ নেই তাই এটা ধরে রাখার জন্য সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। মোট কথা হলো জনসাধারণকে এ সম্পর্কে একটি ভালো ম্যাসেজ পৌঁছে দিতে হবে যেন সাহসের সাথে এ স্কীমে বিনিয়োগ করতে পারে। আর এটা তখনই সম্ভব যদি মানুষের মাঝে আস্থা তৈরি হয়। এস্কীম পরিচালনা কালে সামনে আরো চ্যালেঞ্জ আসবে এই চ্যালেঞ্জ গুলো সঠিক সময়ে মোকাবেলা করতে হবে এরজন্য প্রয়োজন শক্তিশালী একটি কমিশন গঠন। এই বিনিয়োগ সঠিক সময়ে ফেরত দেয়ার জন্য কোন খাতে বিনিয়োগ করা হবে সেগুলো নিয়েও ভাবতে হবে। কারন ফেরত দেয়ার সময় সরকারকে যেন বেকায়দায় পড়তে না হয় তাই আগ থেকেই এ বিষয়ে একটি সুষ্ঠ পরিকল্পনা প্রয়োজন। সঠিকভাবে পরিচালনা করলে দিনদিন সাধারণ মানুষ এই খাতে বিনিয়োগ করতে আস্থা পাবে। মনে রাখতে হবে এটি একটি সার্বজনীন প্রক্রিয়া তাই সকল স্তরের মানুষের চিন্তা সমভাবে করতে হবে। সকল কার্যক্রমের সঠিক প্রয়োগে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হউক এ স্কীম এ প্রত্যাশা সকলের।



লেখক পরিচিতি

প্রাবন্ধিক