চকরিয়া পৌরসভার বাটাখালী স্বপ্নপুরী ক্লাবের পশ্চিম এলাকায় ৩৪ বছরের একটি চলাচল সড়ক দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় দাপুটে মহল। এ অবস্থায় যাতায়াত দুর্ভোগে পড়ে গত দুইমাস ধরে জিন্মিদশায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার শতাধিক পরিবার। চলাচল সড়কটি বন্ধ করে দেয়ার কারণে বিশেষ করে ওই এলাকার ভুক্তভোগী পরিবার সদস্যদের পাশাপাশি স্কুল কলেজ মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা চরম বেকায়দায় রয়েছেন। এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর দিয়ে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভুমি) এবং চকরিয়া থানার ওসির দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও দুইমাস ধরে জিন্মিদশা থেকে নিস্তার পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার সদস্যরা।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও থানার ওসির দপ্তরে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী নুরুল আমিন চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, জুয়েল, চমিরা বেগম, জহির আহমদ, নওশাদ আমিন, শাহেদা বেগম, নাছির উদ্দিনসহ ২৯ জনের স্বাক্ষরে জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, চকরিয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাটাখালী (স্বপপুরী ক্লাবের পশ্চিমে) এলাকায় জায়গা কিনে শতাধিক পরিবার বাড়িঘর তৈরি করে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু দুইমাস আগে গত ২৩ নভেম্বর হঠাৎ করে স্থানীয় মোজাফফর আহমদ এর ছেলে নুরুল আলম ভাড়াটে দলবল নিয়ে ভুক্তভোগী শতাধিক পরিবারের চলাচল সড়কটির দুই অংশে দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন।
বাটাখালী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, ১৯৮৯ সালে চকরিয়া পৌরসভার করাইয়াঘোনা এলাকার মনিরুজ্জামান গংয়ের ছেলে মোহাম্মদ করিম থেকে পাঁচ শতক জমি কিনে আমি স্থানীয় এলাকাবাসীর চলাচলের জন্য সড়কটি নির্মাণ করে দিই। পাশাপাশি সেসময় বিবাদী নুরুল আলম একই মালিকের চার ছেলের কাছ থেকে ১৫ শতক জমি কিনে বাড়িঘর তৈরি করে সেখানে বসবাস শুরু করেন।
তিনি বলেন, প্রায় ৩৪ বছর ধরে সড়কটি দিয়ে এলাকার শতাধিক পরিবারের নারী পুরুষ শিশু সদস্যরা শান্তিপূর্ণ ভাবে চলাচল করে আসলেও গত দুইমাস আগে অভিযুক্ত নুরুল আলম কূটকৌশল করে এলাকাবাসির চলাচল সড়কটি দুই অংশে দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নুরুল আলম উল্টো আমাকে বলে এলাকাবাসির চলাচল সড়কের জায়গাটি নাকি তাঁর। সেইজন্য বন্ধ করে দিয়েছেন।
নুরুল আমিন চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, চলাচল সড়কটি বন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় আমরা আইনী প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন অভিযুক্ত নুরুল আলম। এখন তিনি সড়কটি খুলে দিতে হলে আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছেন। এই অবস্থায় নিরুপায় হয়ে ইতোমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আমার ছেলে নাহিদুল আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। ওই মামলায় ইতোমধ্যে তদন্ত রিপোর্টে সড়কটি যে এলাকাবাসীর তা সনাক্ত করে দিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভুমি)।
এলাকাবাসীর চলাচল সড়ক বন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে গতকাল শনিবার রাত সাতটার দিকে অভিযুক্ত নুরুল আলমের মোবাইলে (০১৮৩১-০৭৪৪১৫) পরপর চারবার কল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সড়ক বন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর স্বাক্ষরে চকরিয়া থানায় জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগটি তদন্ত করছেন এসআই কামরুল ইসলাম। জানতে চাইলে চকরিয়া থানার এসআই কামরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে দেখা গেছে, সড়কটি বন্ধ করে ওই এলাকার পরিবার গুলোকে অনেকটা জিন্মি করে রাখা হয়েছে। এটি খুবই অমানবিক।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, এসিল্যান্ড অফিসের রিপোর্ট পেলে এএসপি সার্কেল ও থানার ওসির সঙ্গে কথা বলে দুয়েকদিনের মধ্যে জনগণের সড়কটি পুনরায় খুলে দেয়ার ব্যবস্থা নেব।
এব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো.রাহাত উজ জামান বলেন, সড়কটি নিয়ে আদালতের তদন্ত রিপোর্ট ইতোমধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর একই বিষয়ে ২৯ জন এলাকাবাসীর স্বাক্ষরে দেওয়া অভিযোগটি কী পর্যায়ে আছে তা আগামীকাল দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ##
৭ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ২৯ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৫২ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে