ইসরায়েলে নতুন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান কাছের মানুষকে আলিঙ্গন করা কেন জরুরি? একদিনে আরও ২৬ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত্যু ১ পাল্টা হামলার মুখে যাত্রী ছাড়াই বিদেশে বিমান সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সমাঝোতা একটি ইতিবাচক দিক : আতিকুর রহমান জামায়াতের ১নং ওয়ার্ড কর্তৃক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নাগেশ্বরীতে বাণিজ্যমেলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন রায়গঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাহার হোসেন কান্টু গ্রেপ্তার শ্রীপুরে দফায় দফায় হামলা ও ভাঙচুর, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ও দোকানপাটে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ লালপুরে জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত লালপুরে বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে জনতার ঢল! ঈশ্বরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত সাবেক সংরক্ষিত এমপি’র বাড়িতে যৌথবাহিনীর অভিযান: ইয়াবা-অস্ত্রসহ পুত্র আটক সুন্দরগঞ্জে জামায়াত কর্মী হত্যা মামলায় যুবলীগ নেতা আজম কারাগারে কালাইয়ে দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় চিকন আলী নামে এক আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য গ্রেপ্তার পাঁচ ব্যাংক মিলে হচ্ছে এক ব্যাংক, চাকরি হারাবেন না কর্মীরা নেতানিয়াহুর জন্য বিশ্ব আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে’ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হককে অবরুদ্ধের প্রতিবাদে পীরগাছায় মশাল মিছিল সড়ক দুর্ঘটনায় লালপুরের যুবকের মৃত্যু

রোজা ভঙ্গ ও মাকরুহ হয় যেসব কারণে? কাজার বিধানসমূহ

দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 16-03-2024 10:48:33 pm


সিয়াম সাধনার জন্য বিশ্বজুড়ে আবারও শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। রমজান মুমিনের রহমত, বরকত, নাজাতের মাস। আল্লাহর সঙ্গে প্রেমের সেতুবন্ধনের মাস। সব চাওয়া-পাওয়া, ক্ষমা-মুক্তি, ইবাদত-বন্দেগি ও নৈকট্য লাভের মাস। 

মহা উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র রমজান পালন করছে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ। আসুন জেনে নেই, যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ ও মাকরুহ হয়, এবং কাজার বিধানসমূহ সম্পর্কে।


রোজা ভঙ্গের কারণগুলো


১. ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।

২. স্ত্রী সহবাস করলে ।

৩. কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)।

৪. ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।

৫. নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা কানে ওষুধ বা তৈল প্রবেশ করালে।

৬. জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে ।

৭. ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষুধ পৌঁছালে।

৮. কংকর পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।

৯. সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।

১০. পুরা রমজান মাস রোজার নিয়ত না করলে।

১১. দাঁত হতে ছোলা পরিমান খাদ্য-দ্রব্য গিলে ফেললে।

১২. ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন করলে।

১৩. মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে ।

১৪. রাত্রি আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর পানাহার করলে।

১৫. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর নিদ্রা হতে জাগরিত হওয়া এ অবস্থায় শুধু কাজা ওয়াজিব হবে।


রোজার মাকরুহগুলো


১. অনাবশ্যক কোনো জিনিস চিবানো বা চাখা

২. কোনো দ্রব্য মুখে দিয়ে রাখা

৩. গড়গড় করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেয়া কিন্তু পানি যদি নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

৪. ইচ্ছাকৃত মুখে থুথু জমা করে গলাধঃকরণ করা

৫. গীবত, গালা-গালি ও ঝগড়া-ফাসাদ করা। কেউ গায়ে পড়ে ঝগড়া-ফাসাদ করতে এলে বলবে, আমি রোজাদার তোমাকে প্রত্যুত্তর দিতে অক্ষম

৬. সাড়া দিন নাপাক অবস্থায় থাকা। এটি অত্যন্ত গুনাহের কাজ

৭. অস্থিরতা ও কাতরতা প্রকাশ করা

৮. কয়লা চিবিয়ে অথবা পাউডার, পেস্ট ও মাজন ইত্যাদি দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করা


যেসব কারণে রোজা না রাখলে ক্ষতি নেই তবে কাজা আদায় করতে হবে


১. কোনো অসুখের কারণে রোজা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেললে অথবা অসুখ বৃদ্ধির ভয় হলে। তবে পরে তা কাজা করতে হবে।

২. গর্ভবতী স্ত্রী লোকের সন্তান বা নিজের প্রাণ নাশের আশঙ্কা হলে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ তবে কাজা করে দিতে হবে।

৩. যেসব স্ত্রী লোক নিজের বা অপরের সন্তানকে দুধ পান করান রোজা রাখার ফলে যদি দুধ না আসে তবে রোজা না রাখার অনুমতি আছে কিন্তু পরে কাজা আদায় করতে হবে।

৪. শরিয়তসম্মত মুসাফির অবস্থায় রোজা না রাখার অনুমতি আছে। তবে রাখাই উত্তম।

৫. কেউ হত্যার হুমকি দিলে রোজা ভঙ্গের অনুমতি আছে। পরে এর কাজা করতে হবে।

৬. কোনো রোগীর ক্ষুধা বা পিপাসা এমন পর্যায়ে চলে গেল এবং কোনো দ্বীনদার মুসলিম চিকিৎসকের মতে রোজা ভঙ্গ না করলে তখন মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। তবে রোজা ভঙ্গ করা ওয়াজিব। পরে তা কাজা করতে হবে।

৭. হায়েজ-নেফাসগ্রস্ত (বিশেষ সময়ে) নারীদের জন্য রোজা রাখা জায়েজ নয়। পরবর্তীতে কাজা করতে হবে।


যারা রোজা রাখবেন, যারা রাখবেন না


ইসলামের বিধান হলো- মুসলিম, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন, স্থায়ী ও শারীরিক-মানসিকভাবে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিমের জন্য সিয়াম পালন বা রোজা রাখা ফরজ।


যারা উল্লেখিত শর্তাবলির আওতাভুক্ত থাকবেন, তাদের অবশ্যই পবিত্র রমজান মাসের সিয়াম পালন করতে হবে। আর যাদের মধ্যে শর্তাবলি পাওয়া যাবে না, তাদের ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ নয়। মুসলিম স্কলারদের ঐকমত্যে মোট দশ শ্রেণির মানুষের মধ্যে সিয়াম পালনের শর্ত অনুপস্থিত। তারা হলো- 


(১) কাফের বা অমুসলিম : কারণ তারা ইবাদত করার যোগ্যতা রাখে না।


(২) অপ্রাপ্তবয়স্ক : অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য বয়োপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সিয়াম পালন ফরজ নয়।


(৩) পাগল বা সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন নয় এমন ব্যক্তি : পাগল বলতে সাধারণত যার জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পেয়েছে, তাকে বুঝায়। যার মধ্যে ভালো-মন্দ পার্থক্য করার শক্তি থাকে না এমন ব্যক্তির জন্য সিয়াম পালন ফরজ নয়।


(৪) অতিশয় বৃদ্ধ : এমন বয়স্ক মানুষ যে ভালো-মন্দ পার্থক্য করতে পারে না। একজন মানুষের মাঝ থেকে যখন ভালো-মন্দ পার্থক্য করার অনুভূতি চলে যায়, তখন সে শিশুর মতোই।


(৫) যে সিয়াম পালনের সামর্থ্য রাখে না : রোগব্যাধি বা শারীরিকভাবে এমন অক্ষম ব্যক্তি, যার সিয়াম পালনের সামর্থ্য ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই- তাদের ওপরও রমজানের রোজা পালনের বিধান নেই। কারণ সে এই আমল-ইবাদত পালনের সামর্থ্য রাখে না।


(৬) মুসাফির : মুসাফির ব্যক্তির ওপর রমজানের সিয়াম পালন করা জায়েজ নয়। তবে একটি কথা বিশেষভাবে মনে রাখা উচিত- কোনোভাবেই সফরকে যেন সিয়াম পালন না করার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা না হয়।


(৭) যে রোগাক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার আশা রাখে : যেসব রোগাক্রান্ত ব্যক্তির ভবিষ্যতে বা পরবর্তী সময়ে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তার জন্য রমজানের রোজা পালন থেকে বিরত থাকার অনুমতি রয়েছে।


(৮) ঋতুমতী নারী : ঋতুকালীন নারীর জন্য সিয়াম পালন জায়েজ নয় বরং নিষেধ। পরবর্তী সময়ে ছুটে যাওয়া রোজাগুলোর কাজা করতে হবে।


(৯) গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারী : যদি গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী নারী রোজা রাখার কারণে তার নিজের বা সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা হয়; তবে সে সিয়াম ভঙ্গ করতে পারবে এবং পরে নিরাপদ সময়ে সে সিয়ামের কাজা আদায় করে নেবে।


(১০) অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে সিয়াম ভেঙে ফেলতে বাধ্য ব্যক্তি পরবর্তী সময়ে ওই রোজাটির কাজা আদায় করবে।


রোজা ভঙ্গ হলে


বিনা কারণে রোজা ভঙ্গ করলে তাকে অবশ্যই কাজা-কাফফারা উভয়ই আদায় করা ওয়াজিব। যতটি রোজা ভঙ্গ হবে, ততটি রোজা আদায় করতে হবে। কাজা রোজা একটির পরিবর্তে একটি অর্থাৎ রোজার কাজা হিসেবে শুধু একটি রোজাই যথেষ্ট। কাফফারা আদায় করার ৩টি বিধান রয়েছে।


একটি রোজা ভঙ্গের জন্য একাধারে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। কাফফারা ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজার মাঝে কোনো একটি ভঙ্গ হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।


যদি কারো জন্য ৬০টি রোজা পালন সম্ভব না হয় তবে ৬০ জন মিসকিনকে ২ বেলা খাওয়াতে হবে। কেউ অসুস্থতাজনিত কারণে রোজা রাখার ক্ষমতা না থাকলে ৬০ জন ফকির, মিসকিন, গরিব বা অসহায়কে প্রতিদিন ২ বেলা করে পেটভরে খাওয়াতে হবে। গোলাম বা দাসী আজাদ করে দিতে হবে।