চিলমারীতে পানিতে পড়ে যুবকের মৃত্যু আদমদীঘিতে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী তিনজন নিহত ঝিনাইগাতীতে দেশীয় মাছ ধরার ৯৭৫ মিটার অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল আটক ও ধ্বংস ৭৫ বছরের পুরনো কলেজ, ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য লাইব্রেরিতে মাত্র ৪০টি আসন সুন্দরবন সংলগ্ন মালঞ্চ নদীর চরে বনায়ন তৈরিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ঝিনাইদহে অবৈধ স্থাপনা ও সড়ক থেকে দোকানপাট উচ্ছেদ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাচন নিয়ে সরকারের অফিসিয়াল নির্দেশনা পায়নি সেনাবাহিনী নাসিরনগরে মহানবী সা. এর শানে কটূক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ সিএনআরএসের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন কাদাকাটিতে হাত কোদালে খাল খনন চলছে, কাজের খবর জানেন না প্রকল্পের সভাপতি আশাশুনিতে উত্তরণের এক্সেস প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা ক্ষেতলালে বিডব্লিউবি বিতরণে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরায় সরকারি বন বিভাগের গাছ কেটে ভূমি দখলের অভিযোগ ইসলামপুরের সাপধরী ইউনিয়নে বিনামূল্যে স্যানিটারি ল্যাট্রিন সামগ্রী বিতরণ সাতক্ষীরায় বিশ্ব শিশুশ্রম উপলক্ষে আলোচনা সভা সাতক্ষীরায় বিজিবির অভিযানে ফেন্সিডিলসহ প্রায় চোদ্দ লক্ষ টাকার মালামাল আটক চিলমারীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের দাফন সম্পন্ন গলাচিপায়- স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি প্রয়োগ মেলা ও সেমিনার। লালপুরে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মশালা প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক  প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত।

কক্সবাজারে ফসলের জমিতে বিষাক্ত তামাক চাষ, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

কক্সবাজারের চকরিয়া ও রামু উপজেলায় ৭৪০ হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ করা হয়েছে। অতিরিক্ত টাকার লোভে ধান ও সবজি চাষ বাদ দিয়ে তামাক চাষে ঝুঁকছেন অধিকাংশ কৃষক।


সরেজমিনে দেখা গেছে, রামুর রাজারকুল, মৈষকুম, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়ার নাপিতেরচর, কাউয়ারখোপ, মনিরঝিল ও ফাক্রিকাটা এলাকায় বাঁকখালী নদীর দুই তীরে তামাকের ক্ষেত। এলাকার ফসলি জমিগুলোও তামাকের দখলে।


একই চিত্র চকরিয়ায়ও। এই উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়নে তামাকের চাষ হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি তামাক চাষ হচ্ছে বমু বিলছড়ি, সুরাজপুর মানিকপুর ও কাকারা ইউনিয়নে। এই তিন ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মাতামুহুরী নদীর চর এবং তীরবর্তী জমিতেও তামাকের আবাদ হয়ে আসছে।


বর্ষায় নদীর দুকূল উপচে ঢলের পানিতে পলি জমে। আর সেই উর্বর জমির বেশির ভাগই তামাকের দখলে চলে গেছে। অথচ নদীর আশপাশের স্বল্প উর্বর জমিতে বাদাম, ভুট্টা, সরিষা, শাকসবজি, গোলাপ, সূর্যমুখী ফুল ও বোরোর আবাদ হয়েছে।


এখানকার মানুষ প্রাকৃতিক পানি নির্ভর। সেক্ষেত্রে সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাকঁখালী নদী অন্যতম ভরসা। বর্তমানে যা অনিরাপদ হয়ে উঠছে। তামাক চাষে ব্যবহৃত অতিমাত্রার সার-কীটনাশক ও তামাকের রাসায়নিক উপাদান ক্রমেই নদী ও জলাশয়ের পানিতে মিশে পানিদূষণ করছে। বিশেষ করে ডিম পাড়ার পরিস্থিতিতে কীটনাশকযুক্ত পানির কারণে মাছ বংশ বিস্তারের অনুকূল পরিবেশ হারাচ্ছে। আরও একটি আশঙ্কার বিষয় হল, তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াকরণ কাজে সম্পৃক্ত থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকায় শিশু-কিশোরদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার দিন দিন কমে যাচ্ছে।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবে ভূমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। তামাক চাষ করা জমিতে অন্য ফসল সহজে হয় না। ফসলের জন্যে হুমকিস্বরূপ এই বিষাক্ত তামাক।


তামাক কোম্পানিগুলোর প্রলোভনে পড়ে বেশি লাভের আশায় প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে তামাক চাষে জড়িয়ে পড়েন অর্থলোভী কিছু কৃষক।


বিশেষজ্ঞদের মতে, তামাক রোপণ থেকে শুরু করে পাতা কাটা এবং শুকানো পর্যন্ত এর সকল প্রক্রিয়াতে রয়েছে বিষাক্ত উপাদান। কৃষকরা ভয়াল এ বিষ সম্পর্কে জানার পরেও বাড়তি লাভের আশায় তামাক চাষে ঝুঁকছে। এর পরিচর্যায় কৃষকরা নিজেদের পাশাপাশি পরিবারের স্ত্রী ও কোমলমতি শিশুদেরও ব্যবহার করছে। ফলে বাড়ছে ক্যানসারসহ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ। স্বাস্থ্য ও পরিবেশে ঝুঁকি জেনেও অনেকেই অতিরিক্ত লাভের আশায় তামাক চাষ ছাড়তে পারছে না।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ইতোমধ্যে বেশ ক’টি বেসরকারি সংস্থা কক্সবাজার জেলায় কাজ করলেও কৃষকের পক্ষ থেকে তামাক চাষ বন্ধে কোনো ধরনের আগ্রহ নেই। ফলে অনেকটা বিনা বাধায় স্থানীয় কৃষকদের জিম্মি করে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিবছর তামাক চাষে বিনিয়োগ করে আসছে।


কৃষকরা বলেন, তামাক চাষ আসলেই ক্ষতিকর উপাদান। কিন্তু সংসারের অভাবের কারণে বাধ্য হয়ে তামাক চাষ করতে হয়। ফসলের চেয়ে তামাক চাষ করলে টাকা বেশি পাওয়া যায়। তাই অধিকাংশ কৃষক তামাক চাষের ক্ষতিকর সকল কারণ জেনেও অতিরিক্ত লাভের আশায় ফসলের পরিবর্তে তামাক চাষ করতে বেশি আগ্রহী।


রামু কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু নোমান মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি জেনেও কৃষকেরা তামাক কোম্পানিগুলোর ঋণসহায়তা ও লোভনীয় প্রলোভনে তামাক চাষ ছাড়তে পারছে না। দিন দিন তামাক চাষের প্রবণতা বেড়েই চলেছে।


পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, তামাকে অতিরিক্ত কীটনাশক ও সার প্রয়োগের ফলে নদীদূষণ বেড়েছে। এতে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। পাশাপাশি তামাক পোড়ানোর জন্য সংরক্ষিত বন ও ভিটেবাড়ির গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে।


কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমার জানান, তামাক পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর একটি উপাদান। এই তামাক চাষের কারণে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। যে ভূমিতে একবার তামাক চাষ করা হয়, সেখানে অন্য কোনো ফসল হয় না। কৃষকদের তামাক চাষ থেকে সরে আসতে আমরা নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। যেসকল কৃষক তামাক চাষ করেন, তাদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হয় না। চলতি মৌসুমে কক্সবাজারের রামু ও চকরিয়ায় ৭৪০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। এটি আগের চেয়ে অনেক কমে এসেছে। এখন শাক সবজি ও ফলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা তামাক চাষ ছেড়ে অনেকটা ফসলের দিকে ঝুঁকছে। এটি অব্যাহত থাকলে তামাক চাষ একেবারে কমে আসবে।

Tag
আরও খবর