পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা মরিচের জন্য বিখ্যাত হলেও এবার মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে পেঁয়াজের বীজের আবাদ। দৃষ্টিনন্দন এই সাদা ফুলের মিষ্টি সুবাসে মম করছে চারদিক। দূর থেকে দেখে মনে হবে হাজারো তারার মেলা। আর এই সাদা ফুলের মাঝে কালো বীজেই লুকিয়ে রয়েছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন।
চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং এবছর পেঁয়াজের বীজের আকাশচুম্বী দামে স্বপ্ন বুনছেন এলাকার কৃষকরা।
উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের সুপেত পাড়া এলাকার কৃষক ফজলু করিম জানান, গত বছর পরীক্ষামূলক ৩৩ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ করে ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এবছর খুব বেশি আগ্রহ নিয়ে ৭৫ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছি। তিনি আরো বলেন, আমার ৭৫ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজের বীজ বপন থেকে শুরু করে বীজ ঘরে তোলা পযন্ত খরচ পড়বে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লাভ হবে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি।
আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বড়সিংগা টুপি পাড়া
এলাকার কৃষক বিনোদ কুমার বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত অল্প পরিসরে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করে থাকি। এই ফসল চাষ করে লাভবান হয়েছি। এবছর ৪২ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছি।
একই ইউনিয়নের মাজা পাড়া এলাকার কৃষক ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, এ বছর ৭০ শতাংশ জমিতে আমি পেঁয়াজ বীজ চাষ করেছি। ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। বিভিন্ন রোগবালাইয়ের জন্য কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে তিন লাখ টাকার ওপরে বীজ বিক্রির আশা করছেন তিনি।
বালিয়া মোড়লপাড়া এলাকার পেঁয়াজের বীজ চাষী সুরেশ বলেন, আমি প্রতি বছরে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করি। এবার প্রায় ৮ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ আবাদ করেছি। এই বীজ বা দানা উৎপাদন অতি লাভজনক হলেও, তেমনি ঝুঁকিও রয়েছে শতভাগ। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে উৎপাদন ভালো ও লাভজনক হয়। আর বিরূপ হলেই মাথায় হাত পড়ে চাষীদের।
তবে বেশিরভাগ চাষি জানালেন, এসব ফুলে পরাগায়নের প্রধান মাধ্যম হলো মৌমাছি। কিন্তু পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে, তাঁরা বেশি মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করার কারণে মারা পড়ছে উপকারী পোকা ও মৌমাছি। একারণে পেঁয়াজ বীজের ক্ষেতে দিন দিন মৌমাছির আনাগোনা কমে যাচ্ছে। তাই হাতের স্পর্শে কৃত্রিমভাবে পরাগায়নের চেষ্টা চলছে। পরাগায়ন না হলে পেঁয়াজ ফুলে পরিপক্কতা আসে না। বীজ পরিপক্ক হতে সময় লাগে ১২০ থেকে ১৩০ দিন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ বলেন, এবছর উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে।এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজ চাষ ও কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বীজ উৎপাদন করে চাষীরা অধিক মুনাফা করেন এবং আমাদের স্থানীয় ভাবে চাহিদা পূরণ করবে ও বৈদেশিক আমদানি নির্ভরতা অনেক খানি কমবে বলে আশা করছি।
১১ ঘন্টা ৮ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ১২ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ৪৩ মিনিট আগে
১১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
১৩ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে