রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালীতে অবস্থিত আদর্শ ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ পদ নিয়ে চলছে ত্রিমুখী জটিলতা। কলেজের দায়িত্বে রয়েছেন তিনজন—একজন ভারপ্রাপ্ত, একজন পূর্ণাঙ্গ ও একজন স্বঘোষিত। এই জটিলতার মধ্যেই দুই অধ্যক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা অফিসে এক অধ্যক্ষ অপর অধ্যক্ষকে চড়-থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
চড়-থাপ্পড়ের শিকার জয়নাল আবেদিন নিজেকে কলেজের পূর্ণাঙ্গ অধ্যক্ষ দাবি করেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি রাজশাহীর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ের কর্মচারীদের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। এ সময় সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল হক সেখানে প্রবেশ করে পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
জয়নাল আবেদিন আরও জানান, তিনি ঘটনার পর নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজুল হক প্রথমে দাবি করেন, তিনি সেদিন শিক্ষা ভবনে যাননি। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থাকার কথা জানালে তিনি বলেন, "তাহলে আমাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন না করলেই খুশি হবো। আমি মিথ্যা কথা বলতে পারব না।"
সিরাজুল হক নিজেকে কলেজের ‘স্বঘোষিত’ অধ্যক্ষ দাবি করেন। তবে গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাকে এই দায়িত্ব দেননি।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, “জয়নাল আবেদিন অভিযোগ করতে আসবেন, এটা জানতাম। পরে তিনি অভিযোগ দিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখছি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গভর্নিং বডির সভাপতি ও ইউএনও সোহরাব হোসেন জানান, কলেজে অধ্যক্ষের পদ নিয়ে জটিলতা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। জয়নাল আবেদিন অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তিনি আলাদা কমিটি অনুমোদন করিয়ে এনেছেন, যা ইউএনও জানতেন না। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে। তবে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি।
ইউএনও সোহরাব হোসেন বলেন, “শিক্ষা ভবনে এমন মারধরের ঘটনা ঘটে থাকলে এটি ফৌজদারি অপরাধ। পুলিশ তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।