সাতক্ষীরায় জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সভা তাণ্ডবে পাইরেসির হানা ট্রাক মালিককে হয়রানির অভিযোগে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে মোংলায় বাস যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থেকে মুল্যবান কষ্টিপাথরের বিষ্ণু মূর্তিসহ ০২ জন গ্রেপ্তার নড়িয়ায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন জয়পুরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত-১, শিশুসহ আহত ৫ নোয়াখালীতে এসিড নিক্ষেপের ভয় দেখায় জোরপূর্বক দর্শন গ্রেপ্তার ১ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ইসরায়েলে নতুন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান কাছের মানুষকে আলিঙ্গন করা কেন জরুরি? একদিনে আরও ২৬ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত্যু ১ পাল্টা হামলার মুখে যাত্রী ছাড়াই বিদেশে বিমান সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সমাঝোতা একটি ইতিবাচক দিক : আতিকুর রহমান জামায়াতের ১নং ওয়ার্ড কর্তৃক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নাগেশ্বরীতে বাণিজ্যমেলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন রায়গঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাহার হোসেন কান্টু গ্রেপ্তার শ্রীপুরে দফায় দফায় হামলা ও ভাঙচুর, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ও দোকানপাটে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ

কৃষক মনিরের কৃষি খামারে আলু গাছে টমেটোর জোড় কলম

আলু গাছে টমেটোর জোড় কলম করে আলোঢ়ন সৃষ্টি করেছে কৃষক মনির। কৃষক মনিরের বাড়ি  রাজশাহী শহরে হলেও গোদাগাড়ীর কৃষক হিসাবে তাকে সবাই চিনে। গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুর গ্রামে মনিরের কৃষি খামার। সে তার খামারে নতুন নতুন পদ্ধতির ব্যাবহার ও নতুন নতুন ফসল চাষবাদ করে। তার চাষবাদ দেখে নতুন নতুন চাষবাদে আগ্রহী হয়ে উঠে এ অঞ্চলের কৃষকরা। এবার সে খামারে জোড় কলম পদ্ধতি ব্যাবহার করে ৪০ টি আলু গাছে তেরী করেছে টমেটোর গাছ। আলুর গাছে টমেটোর গাছ তৈরী করে রিতীমতো আলোঢ়ন সৃষ্টি করেছে কৃষক মনির। দুরদুরান্ত থেকে তার এই জোড় কলম পদ্ধতির টমেটোর গাছ দেখতে আসছে কৃষকরা। শুধু তাই নয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীরা আসছে তার কৃষি খামারে আলু গাছে তৈরী করা টমেটোর গাছ দেখতে ও শিখতে।

টমেটো এবং আলু উভয়ই একই গোত্রের মানে (হরমযঃংযধফবং) দীর্ঘ রাত্রির উদ্ভিদ এ কারনে এদের মধ্যে জোড় কলম পদ্ধতি বেশ কার্যকর। উভয় গাছেই থাকে আল্কালয়েড নামক একপ্রকার উপাদান যা তাদের পোকামাকড় থেকে রক্ষা করে। 

জোড় কলমের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটা সময় এবং স্থান সাশ্রয়ী । একই গাছে আলু এবং টমেটো উৎপাদনের ফলে অর্থনৈতিক ভাবে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব।

আলু এবং টমেটো একই গাছে উৎপাদন করার ধারনা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৭ সালে ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট এ। যুক্তরাজ্যের গবেষকরা সম্প্রতি এই ধারণার সফল বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন। তারা একই গাছে উপরে টমেটো আর নিচে আলু ফলাতে সক্ষম হয়েছেন যাতে আলু ও টমেটোর স্বাদ অক্ষুন্ন থাকে। এই  কাজের জন্য তারা জিন প্রকৌশল নয়, গ্রাফটিং বা জোড় কলমের আশ্রয় নিয়েছেন। টমেটোর সঙ্গে আলুর জোড় কলম পদ্ধতিতে আলু ও টমেটো একই গাছে উৎপাদন করা সম্ভব ।

একটি প্রাপ্তবয়স্ক আলু গাছকে (যাকে স্টক বলা হয়) মাটি থেকে প্রায় ১ ইঞ্চি উপরে ভি শেপ করে কেটে নিয়ে উপরের অংশটি ফেলে দিতে হবে।

অন্যদিকে একটি টমেটো গাছকে (যাকে সায়ান বলা হয়) মাটি থেকে ৬ থেকে ৭ ইঞ্চি কেটে আগাসহ উপরের অংশটি কেটে নিতে হবে। এ কাজের জন্য আলু গাছের সমান ব্যাস বিশিষ্ট টমেটো গাছ নিলে গ্রাফটিং বা জোড় কলম করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হয়। তারপর টমেটো গাছের কাটা অংশটি  আলু গাছের কাটা অংশটির উপর প্রতিস্থাপন কড়তে হবে। একে বলা হয় গ্রাফটিং বা জোড় কলম। গ্রাফটিং করা অংশটি গ্রাফটিং রেপিং টেপ দিয়ে ভালোভাবে পেঁচিয়ে দিতে হবে। প্রতিস্থাপিত অংশ থেকে নতুন পাতা গজানোর আগপর্যন্ত রেপিং টেপ খোলা যাবেনা।

কৃষক মনিরের খামারে গিয়ে কথা হয় তার সাথে। সে বলেন টিভিতে আলু গাছে জোড় কলম পদ্ধতিতে টমেটোর গাছ তৈরী করা দেখে সে পরীক্ষা মুলক ভাবে ৪০ টি আলু গাছে জোড় কলম পদ্ধতিতে টমেটো গাছ তৈরী করেছে। এতে সে সফল হয়েছে। 

সে আরো বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলা টমেটোর জন্য সারা বাংলাদেশে বিখ্যাত। দেশের সিংগভাগ টমেটো উৎপাদন হয় এ উপজেলায়। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে কৃষকেরা টমেটোর তেমন দাম পাই না। তাই এ উপজেলার কৃষকরা টমেটোর ক্ষেত থেকে ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত টমেটো সংগ্রহ করে। তারপর টমেটোর গাছ কেটে বোরো ধানের আবাদ করে। জানুয়ারী মাসের মাঝামাঝিতে এ উপজেলায় আর টমেটো পাওয়া যায় না। এপ্রিল মে মাসে টমেটোর আবার বাজার মূল্য বৃদ্ধি পাই। তাই এপ্রিল মে মাসে টমেটোর বাজার ধরার জন্য অল্প পরিসারে হলেও এ পদ্ধতিকে কাজে লাগাতে চান সে।

মনির বলেন, আলু গাছ ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা হলেই আলু গাছে টমেটোর জোড় কলম ভাল হচ্ছে। আলু গাছ বেশী বড় হলে জোড় কলম ভালো হচ্ছে না। জোড় কলম করার ৪ থেকে ৫ দিনের মাথায় টমেটোর কান্ড থেকে কুশি ছাড়তে শুরু করে। পতা সজিব ও সতেজ হলে পলিথিনের ব্যাগ খুলে ফেলতে হয়। পলেথিন ব্যাগ খুলতে সময় লাগে ৭ থেকে ১০ দিন। জোড় কলম করার ১৫ দিনের মাথায় টমেটোর ফুল আসতে শুরু করে। ১ থেকে দেড় মাসের মাথায় ফল টমেটোর গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা যায়।  

সে আরো বলেন, এ পদ্ধতি ব্যাবহার করে মাটির নিচে আলু এবং মাটির উপরে টমেটো। একই গাছ থেকে দুই রকম সবজি পাওয়া যাবে। এমনকি ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস টমেটো পাওয়া যাবে। কারন আলু লাগানোর পর ক্ষেত থেকে আলু তুলতে সময় লাগে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস। 

এ পদ্ধতিতে টমেটোর গাছ আরো বৃদ্ধি করবেন কি না প্রশ্নের জবাবে কৃষক মনির বলেন, এবার পরীক্ষা মুলক ৪০ টি আলু গাছে টমেটোর জোড় কলম করেছি। আর বৃদ্ধি করার ইচ্ছে  নেই। তবে সে বলেন, এর আগে তীত বেগুন গাছে টমেটোর জোড় কলম করে সফল হয়েছি। এবার মার্চ মাসে প্রায় ৪০০ টি তীত বেগুন গাছের সাথে টমেটোর জোড় কলম পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে টমেটোর আবাদ করবো। এতে করে অসময়ে টমেটো পাওয়া যাবে এবং দামও ভালো পাবো।


Tag
আরও খবর