তাণ্ডবে পাইরেসির হানা ট্রাক মালিককে হয়রানির অভিযোগে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে মোংলায় বাস যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থেকে মুল্যবান কষ্টিপাথরের বিষ্ণু মূর্তিসহ ০২ জন গ্রেপ্তার নড়িয়ায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন জয়পুরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত-১, শিশুসহ আহত ৫ নোয়াখালীতে এসিড নিক্ষেপের ভয় দেখায় জোরপূর্বক দর্শন গ্রেপ্তার ১ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ইসরায়েলে নতুন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান কাছের মানুষকে আলিঙ্গন করা কেন জরুরি? একদিনে আরও ২৬ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত্যু ১ পাল্টা হামলার মুখে যাত্রী ছাড়াই বিদেশে বিমান সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সমাঝোতা একটি ইতিবাচক দিক : আতিকুর রহমান জামায়াতের ১নং ওয়ার্ড কর্তৃক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নাগেশ্বরীতে বাণিজ্যমেলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন রায়গঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাহার হোসেন কান্টু গ্রেপ্তার শ্রীপুরে দফায় দফায় হামলা ও ভাঙচুর, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ও দোকানপাটে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ লালপুরে জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

ইসরা ও মেরাজ: ইতিহাসের এক বিস্ময়কর যাত্রা

দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 22-02-2023 06:05:57 am

ছবি: লেখক

◾ মিসবাহুল ইসলাম


ইতিহাসের এক বিস্ময়কর যাত্রা, নবীজির অন্যতম মু'জিযা এবং কুদরতি বাস্তবতার এক মহা নিদর্শন। যার উল্লেখ পবিত্র কোরআন সহ বিভিন্ন হাদিসেও রয়েছে। এই ইসরা ও মেরাজ যাত্রায় বুরাকই ছিল নবীজির একমাত্র বাহন। এখন প্রশ্ন হল আল বুরাক কি ?  

বুরাক আরবি শব্দ যা বারক শব্দ থেকে নির্গত । যার অর্থ বিজলি, বিদ্যুৎ, তড়িৎ গতি ইত্যাদি । যেহেতু এটা মেঘের বিজলির ন্যায় শুভ্রতা ও উজ্জ্বলতা প্রদর্শন করে বিদ্যুতের ন্যায় তড়িৎ গতিতে নিমিষেই স্বস্থান পরিবর্তন করে অদৃশ্য হয়ে যায় তাই একে বুরাক বলা হয়। কোরআনে ছয়টি জায়গায় এর উল্লেখ রয়েছে :

 ১ - সূরা কিয়ামাহ - আয়াত : ৮,

 ২ - সূরা বাকারাহ,-আয়াত : ১৯-২০,

৩ - সূরা আর'রয়দ -আয়াত : ১২,

৪ - সূরা আররুম, আয়াত : ২৪,

৫ - সূরা আননূর- আয়াত : ৪৩,

৬ - আল কিয়ামাহ- আয়াত : ৭,

এটা সেই প্রাণী যার উপর আল্লাহর নবীজি (সাঃ )আরোহন করেছিলেন। এবং তাতে আরোহন করেই নৈশ ভ্রমণের যাত্রা শুরু হয়েছিল। স্বয়ং নবীজী এ সম্পর্কে বলছেন: ( "আমাকে এমন একটি বোরাকে আরোহন করানো হয় যার রং ছিল শুভ্র, ধবধবে সাদা ,অতি দীর্ঘ এবং ঘোড়া থেকে ছোট তবে খচ্চরের থেকে বড় যার দৃষ্টিপালকের শেষ সীমায় গিয়ে পড়তো তার খোর") বুখারী : ৩২০৭ নং হাদিস । মুসলিম : ১৬২ নং হাদিস। তাবরনি : ৯৯৭৬ নং হাদিস। এই হাদিস দ্বারা তার দ্রুতগামীতা এবং উজ্জ্বলতার পরিচয় পাওয়া যায়।  

এখন প্রশ্ন হতে পারে ইসরা ও মে'রাজের মধ্যে পার্থক্য কী ? চলেন জেনে নেওয়া যাক,

ইসরা হলো :নৈশ ভ্রমণ, যার সূচনা হয়েছিল মাসজিদুল হারাম থেকে বাইতুল মাকদিস পর্যন্ত বুরাকে আরোহন করার মাধ্যমে যে যাত্রা সম্পন্ন হয় সেটিই ইসরা। যেহেতু প্রসিদ্ধ মতানুসারে এটি নবুয়তের দশম বছর ২৭শে রজব পবিত্র রজনিত (রাত) সংঘটিত হয় তাই একে ইসরা বলা হয়।

 আর অপর পক্ষে আর মেরাজ যার অর্থ: আরোহন ঊর্ধ্বগমন। বাইতুল মাকদিস থেকে সিদরাতুল মুনতাহা ভেদ করে যে যাত্রায় আল্লাহর দিদার লাভ হয় সেটিই মে'রাজ। যেহেতু ইসরা ও মে'রাজ একই রাতে, এক সফরে সংঘটিত হয় তাই আমরা একে লাইলাতুল ইসরা ও মে'রাজ বলে থাকি ।

বুরাকে আল্লাহর নবীজির আরোহন 

এটাই ছিল ইসরা ও মিয়ারাজের যাত্রা। তখন নবীজী (সাঃ) অজু করছিলেন, বুরাক বাহন নিয়ে হঠাৎ জিবরাঈল (আঃ) আল্লাহর রাসূলের সামনে হাজির হয়। এবং নবীজি তাতে আরোহন করেন। আল্লাহর নির্দেশে মুহূর্তেই মসজিদুল হারাম থেকে মক্কা থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মসজিদুল আকসায় পৌঁছে যান। জিব্রাইল বোরাক প্রাণীটিকে একটি পাথরে বেধে দেন। যেই ইসরা সম্পর্কে কোরআনে এরশাদ হয়েছে, "প্রশংসা সেই রবের যিনি মুহাম্মদকে মসজিদুল হারাম থেকে বাইতুল আকসায় নৈশ সফর করান আর তিনি বলছেন আমি বায়তুল মাকদিসের চতুর্পাশে বরকত রেখেছি যাতে আমার নিদর্শন প্রদর্শিত হয়"। সূরা বনী ইসরাঈল : আয়াত :১.

বাইতুল মাকদিস থেকে জিব্রাইল নবীজিকে নিয়ে সরাসরি ঊর্ধ্ব আকাশে গমন করেন । একই সফরে পরপর আসমানে সপ্ত আকাশে বিভিন্ন নবীদের সাথে সাক্ষাৎ লাভ হয়। এবং নবীজি (সাঃ) কে জান্নাত জাহান্নাম সহ বড় বড় নিদর্শন দেখানো হয়। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, "আর তিনি তার রবের বড় বড় নিদর্শন প্রত্যক্ষ করেছেন" সূরা নাজম : আয়াত: ১৮, অবশেষে তিনি সিদরাতুল মুনতাহা ভেদ করে আরশে আ'জিমে আল্লাহর দিদার লাভে ধন্য হন। যেই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ বুখারী মুসলিম সহ বিভিন্ন হাদিসের কিতাবে বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। এবং কোরআনে সূরা :নাজমে :১-১৮ নং আয়াতে তার আলোচনা করা হয়েছে।

ইসরা ওমেরাজ থেকে যেই হাদিয়া নিয়ে এলেন নবীজি (সাঃ): 

১/ উম্মাহর শ্রেষ্ঠ ইবাদত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এতে ফরজ হয় ।

২ / সূরা বাকারার শেষ দুই ৮৫-৮৬ নং আয়াত অবতীর্ণ হয় ।

৩/ শিরক না করলে আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফের ঘোষণা দেওয়া হয় ।

এই রাত ছিল উম্মতের জন্য এক বরকতময় ও মোবারকময় রাত। আল্লাহর নিদর্শনের এক বড় অলৌকিকতা এতে প্রদর্শিত হয় । বোরাকে এ যাত্রা শুরু হয়। এবং যাত্রা শেষে তখনও নবীজির অজুর পানি গড়ানোর চিত্র প্রদর্শিত হওয়া, যা ছিল বুরাক বাহনের এক বড় অলৌকিকতা। এই বুরাক বাহন জান্নাত বাসীদের জন্য ফেরেশতারা এ ধরনের বাহনে আরোহন করে দুনিয়ায় অবতীর্ণ হন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে মেরাজের এই অলৌকিক ঘটনার প্রতি পূর্ণ ঈমান রেখে এ থেকে শিক্ষা হাসিল করার তৌফিক দান করুন।


লেখক

মিসবাহুল ইসলাম

শিক্ষার্থী,  

দারল হেদায়া ইসলামিক ইনস্টিটিউট, বারিধারা ঢাকা । 

বিভাগ, উচ্চতর হাদিস গবেষণা 

আরও খবর