ইশরাকের বিরুদ্ধে ‘ক্রিমিনাল অফেন্সের’ অভিযোগ আসিফ মাহমুদের শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরি, চালকের আসনে বাংলাদেশ তেহরানে দূতাবাসের ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ চলছে: পররাষ্ট্রসচিব সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২৪৪ জন অবশেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলো জিল্লুর রহমানকে দিনাজপুরে পুকুরে ডুবে দুই কন্যা শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স১০০ শয্যায় দাবীতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদন রাজশাহী কলেজ পাঠকবন্ধুর ঈদ পুনর্মিলনী ও আম উৎসব অনুষ্ঠিত লালপুরে ভেজাল আইসক্রিম তৈরির দায়ে ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দুই মিষ্টি ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা শিক্ষার্থীদের ঈদুল আজহা আনন্দের স্মৃতিচারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য মাউশির জরুরি নির্দেশনা আদমদীঘিতে যাত্রীবাহী বাস থেকে দুই কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেপ্তার আদমদীঘিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঈদ পূর্ণমিলনী ও জন সমাবেশ শ্যামনগরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরীর অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা গলাচিপায়-অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জেলা-উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ নগদ অর্থ বিতরণ। সুন্দরবনের ৬০০ হরিণ শিকারের ফাঁদ উদ্ধার ব্রহ্মরাজপুর বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুর রশীদের বিরুদ্ধে সরকারী জমিতে অবৈধভাবে আরসিসি পিলার নির্মাণ করে ছাদ ঢালাইয়ের অভিযোগ কালিগঞ্জের প্রবাসী শ্রমিক শোকর আলী হাতে খেজুর চাষে নতুন দিগন্ত

আশুলিয়ায় মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজে প্রভাষক নিয়োগে লাখ লাখ টাকার ঘুষ দুর্নীতি।

ছবি- সংগ্রহীত



নেই তেমন কোন আয়ের উৎস। কিন্তু তার বিলাসী জীবন-যাপন নজর কাড়ে এলাকার সকলের।

নিজেকে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে পরিচয় দিয়ে বেড়ান সর্বত্র।

যদিও এখন পযন্ত মেলেনি তার বাবার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি সনদ।বলছিলাম সাভারের আশুলিয়ার ফারুক দেওয়ান এর কথা।তিনি সাভারের আশুলিয়ার স্থাপিত  মির্জা গোলাম হাফিস কলেজকে পরিণত করেছেন তার লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে।


গণমাধ্যমের হাতে আসা বেশকিছু অডিও রেকর্ড এবং বেশ কিছু টেলিফোন কথোপকথনে উঠে এসেছে মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্য ফারুক দেওয়ানের নানা অপকর্মের প্রমান।


বিএনপি জামাত কিংবা আওয়ামী লীগ যে দল যখনই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, বছরের পর বছর ধরে মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য পদে বহাল তবিয়তেই রয়েছেন কথিত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এই ফারুক দেওয়ান। যদিও কলেজটির শিক্ষার মান এই মূহুর্তে একেবারেই তলানিতে।


ফারুক দেওয়ানের এই দাপুটে পরিচয়ের পিছনের মূল শক্তি হচ্ছে, তিনি আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানের ছোট ভাই।

বর্তমানে কলেজটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদাধিকার বলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম। তবে ক্ষমতাসীন জোটের নেতাকর্মীদের দাপটে ফারুক দেওয়ানের কাছে অসহায় কমিটির অন্যান্য সদস্য এবং শিক্ষকরা।


সর্বশেষ কলেজটিতে বাংলা বিভাগের ১ প্রভাষক নিয়োগে গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে ফারুক দেওয়ান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। সকল নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খাদিজা নোমান সাথী নামের এক প্রার্থীকে এখন নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ফারুক দেওয়ান। নেপথ্যে খাদিজা নোমান সাথীর কাছ থেকে ১০লাখ টাকা নিয়েছেন চাকুরী দেওয়ার কথা বলে। এই খবরটির প্রমানও মিলেছে একাধিক সূত্র থেকে।


অনিয়মের এই প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্তটা মিলেছে মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজের আয়েশা সিদ্দিকা এবং আব্দুল মালেক খান নামের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই কলেজের শিক্ষকদের দুর্নীতিতে নাম উঠে আসায় বিব্রত  অন্যান্য শিক্ষক সহ পরিচালনা কমিটির বাকী সদস্যরা।


খোজ নিয়ে জানা যায় খাদিজা নোমান সাথী ঢাকার জেলার ধামরাইয়ে থানার স্বর্ণখালী গ্ৰামের খসরু নোমান ও ফেরদৌসী নোমান দম্পতির সন্তান। তাকে নিয়োগে ফারুকের মরিয়া হবার আরেকটি কারণ - এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রভাষক না হতে পারলে চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাবে ১৯৮৮সালের (১২ আগষ্ট) জন্ম নেয়া খাদিজা নোমান সাথীর।


সূত্রমতে, বহিস্কৃত অধ্যক্ষ আদালতের আদেশে পূর্নরায় অধ্যক্ষের পদে ফিরে আসা আজম খানের হাত ধরেই চলছে মূলত ফারুক দেওয়ানের এই লুটপাটতন্ত্র। পূর্ববর্তী অধ্যক্ষ মো. মোহসীন পরিচালনা কমিটির সদস্য পদ আঁকড়ে রাখা ফারুক দেওয়ানকে একাধিকবার অপসারণ করার চেষ্টা করলেও তিনি ব্যর্থ হন। ফারুক দেওয়ানের কুটচালে ভেস্তে যায় আরো কিছুদিন কলেজ অধ্যক্ষের পদ আঁকড়ে রাখার স্বপ্ন।


সূত্রমতে, কলেজটিতে দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে শিক্ষকের সংকট। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় এখানে পড়েও কাঙ্খিত ফল পাচ্ছেন না অর্থের বিনিময়ে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা। অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করলেও তাদের বোর্ড পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেবার বিনিময়ে হাতিয়ে নেয়া হয় মোটা অংকের অর্থ।


কলেজ সংশ্লিষ্ট একাধিক শিক্ষক জানান, ফারুক দেওয়ান ও তার সহযোগিদের লুটপাটের কারণে কলেজটির প্রশাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। শিক্ষার মান অবনতি হতে হতে এখন এমন এক পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যেখান থেকে উত্তরণেও সময় লেগে যাবে কয়েক বছর।


সূত্র মতে, তিনটি বিষয়ে প্রভাষক নিয়োগের জন্য সার্কুলার দেওয়ার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও উদ্দেশ্যমূলক ভাবে শুরু করা হয়নি নিয়োগ প্রক্রিয়া।


কত টাকার বিনিময়ে একেক জনকে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়া হবে- সেই দেন দরবার করতে করতেই কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। কলেজ কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি তিনটি বিভাগে প্রভাষক নিয়োগের জন্য নির্বাচনী বোর্ড গঠন করলেও


বাংলা বাদে অপর দুটি বিষয়ে প্রভাষক নিয়োগে আগ্রহ নেই কর্তৃপক্ষের।


বাংলা বিভাগের প্রার্থী খাদিজা জাহান সাথীকে নিয়োগ দিতে তার কাছ থেকে ১০লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে ফারুক দেওয়ানের বিরুদ্ধে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনী বোর্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মনোনয়ন দিলেও বাংলা বাদে অন্য বিষয় দুটিতে নিয়োগে গড়িমসি করছেন ফারুক দেওয়ান ও তার সহযোগীরা।


ইংরেজি বিষয়ে প্রভাষক নিয়োগের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. তাজিন আজিজ চৌধুরী, সমাজকর্ম বিষয়ের জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো: আবুল হোসেন এবং বাংলার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মেহের নিগারকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মনোনীত করলেও বাংলা বাদে অপর দুটি বিষয়ের প্রভাষক নিয়োগে বরাবরই অনীহা দেখাচ্ছেন ফারুক দেওয়ান সহ তার সহযোগীরা।


ইংরেজিতে প্রভাষক পদের একজন প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, "ফারুক দেওয়ান হুংকার দিয়ে বলেছেন, তার কথাই এখানে শেষ কথা। আমি ইউএনও কিংবা প্রতিমন্ত্রী কাউকে গুনি না। আপাতত বাংলা বিষয় ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হবে না এটাই আমার সিদ্ধান্ত।"


তার প্রশ্ন কেবলমাত্র, পছন্দের প্রার্থীকে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফারুক দেওয়ান।


অনিয়মের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ফারুক দেওয়ান নিজের দায় অস্বীকার করে বলেন, কলেজে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তার দায় পরিচালনা কমিটির সভাপতির।তার সিদ্ধান্ত এবং স্বাক্ষরেই অর্থ লেনদেন হয় সুতরাং দায় দায়িত্ব সভাপতির আমার না।


এদিকে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবী জানিয়েছেন কলেজের সাধারণ শিক্ষকরা। তিনটি বিষয়ের মধ্যে দুটি বাদে কেবলমাত্র একটি বিষয়ে বিশেষ একজন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ায় ফারুক দেওয়ান ও তার সহযোগিতার অপ-তৎপরতাকে রহস্যের চোখে দেখছেন তারা।


শিক্ষকদের দাবি, কলেজের আয় ব্যয়ের হিসাব অডিট করলেই বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল।