ইরানিরা আত্মসমর্পণ করে না: খামেনি ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৬৫৫৮ শান্তিগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে বিএনপি নেতা এম এ সাত্তারের মতবিনিময় সভা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ সোহরাওয়ার্দী কলেজে গণিতে শিক্ষক সংকট : পাঠদানে ধস, হতাশ শিক্ষার্থীরা চবি এলামনাই পুনর্মিলনীর প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত লাখাইয়ের মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিত চিকনপুর ব্রিজে বর্ষার আগমনে বাড়ছে পর্যটকদের ভিড়। নির্বাচনে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত : ডিএমপি কমিশনার শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচিত এনসিসি গঠনে এনসিপিসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে বিএনপির মতবিরোধ সুনামগঞ্জ গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল সালেহ আল হেলাল কুবির তরুণ কলাম লেখক ফোরামের অর্ধযুগ পূর্তি শ্রীপুরে মহাসড়কে অবৈধ অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, বাড়ছে জনদুর্ভোগ ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি। জয়পুরহাটে সামাজিক ও রাজনৈতিক সহনশীলতা বিষয়ক এ্যাডভোকেসি সভা পীরগাছায় বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণের উদ্বোধন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মোংলা বন্দরে সার ও চাল খালাস বন্ধ পরিবেশ রক্ষায় ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রশাসনের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বেগমগঞ্জে বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক চাষীদের মাঝে মৎস্য খাদ্য বিতরণ ফরিদপুর শহর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সজীব আহমেদ গ্রেপ্তার নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য ভাঙা নিয়ে তীব্র বিতর্ক!

শ্রীমঙ্গলে রয়েছে বিপন্নপ্রায় বৃক্ষ নাগলিঙ্গম


পৃথিবীর অনেক দেশে নাগলিঙ্গম পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে খুব কম দেখা যায়। দেশে হাতেগোনা কয়েকটি নাগলিঙ্গম উদ্ভিদ টিকে আছ। এর মধ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রয়েছে বিপন্নপ্রায় বৃক্ষ নাগলিঙ্গম। শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) এর ভবনের পুকুরের পাশে বিশাল নাগলিঙ্গম গাছে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে ফুল ফোটে। এ গাছগুলোতে ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়ে পুরো এলাকাবাসিকে সকাল-বিকাল সৌরভে মুগ্ধ করে রাখে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান  থেকে আগত পর্যটকরা চায়ের রাজধানীখ্যাত শ্রীমঙ্গলে নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখার পাশাপাশি বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে অবস্থিত এই নাগলিঙ্গমগাছ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। আবার কেউ কেউ ক্যামেরাবন্দিও হচ্ছেন গাছের সাথে।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক উদ্ভিদবিজ্ঞানী ড. মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, পৃথিবীতে এ গাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। নাগলিঙ্গম এক প্রকার বিশাল বৃক্ষ, যার ফুলের নাম নাগলিঙ্গম ফুল। এর ইংরেজি নাম ‘ক্যানন বল’। নাগলিঙ্গমের আদি নিবাস মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার বনাঞ্চল। এই গাছে ফুল ধরার পর বেলের মতো গোল গোল ফল ধরে। এগুলো দেখতে কামানের গোলার মতো। বিরল প্রজাতির ফুলটির সৌরভে রয়েছে গোলাপ আর পদ্মের সংমিশ্রণ। নাগলিঙ্গম গাছ ৩৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। গুচ্ছ পাতাগুলো খুব লম্বা, সাধারণভাবে ৮  থেকে ৩১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। বছরের পওায় সব ঋতুতেই এই গাছের পাতা ঝরে এবং কয়েক দিনের মধ্যে আবার নতুন পাতা গজায়। দ্রæত বর্ধনশীল নাগলিঙ্গমগাছে চারা রোপণের ১২-১৪ বছর পর গাছে ফুল ধরে। গাছের কাÐভেদ করে বেরিয়ে আসে প্রায় ৭ ইঞ্চি দীর্ঘ অসংখ্য মঞ্জুরি। এক একটি মঞ্জুরিতে ১০-২০টি ফুল ক্রমান্বয়ে ফুটতে থাকে। মঞ্জুরির একদিকে নতুন ফুল ফোটে, অন্যদিকে পুরাতন ফুল ঝরে পড়ে। ফুলের রঙ অনেকটা লালচে কমলা বা লালচে গোলাপি হয়ে থাকে। ফুলে ৬টি মাংসল পপুরু পাপড়ি থাকে। ফুলের মাঝে থাকে নাগের ফনা আকৃতির পরাগচক্র। ধারণা করা হয়, এর কারণেই এই ফুলের নাম হয়েছে নাগলিঙ্গম।


উদ্ভিদবিজ্ঞানী ড. মো. ইসমাইল হোসেন আরও বলেন, ‘১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ চা বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার আব্দুুল্লাহ আল হোসেন বিটিআরআই ক্যাম্পাসের পুকুরের দক্ষিণপ্রান্তে এ গাছটির চারা রোপণ করেন। তিন দশকে এটি বিশালাকৃতি ধারণ করেছে। যদিও বছরের মার্চ মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এ গাছটিতে ফুল ফোটার কথা, কিন্তু বর্তমানে প্রায় সারা বছরজুড়েই গাছটিতে একসঙ্গে ফুল ও ফল দেখা যায়। ফুল শুকিয়ে গেলে তাতে বাদামি-খয়েরি রঙের গোলাকৃতি ফল হয়। আমাদের দেশে এ গাছটি এখন খুব একটা বেশি নেই। যৎসামান্য গাছ টিকে আছে এদেশে।

প্রতিবেশ-প্রাণবৈচিত্র সংরক্ষণ বিষয়ক গবেষক ও লেখক পাভেল পার্থ বলেণ, ‘নাগলিঙ্গম সুউচ্চ চিরসবুজ বৃক্ষ। প্রায় তিন হাজার বছর পূর্বে আমাজানের জঙ্গলে নাগলিঙ্গম গাছের সন্ধান পাওয়া যায়। এ গাছটি বাংলাদেশে বিপন্নপ্রায়। দেশের প্রাকৃতিক বনে বিশেষ করে সিলেট ও চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে খুব কম সংখ্যক এ গাছটি দেখা যায়। তবে ঢাকাস্থ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বলদা গার্ডেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন ঢাকার এরকম জায়গায় প্রাকৃতিক উদ্যানে নাগলিঙ্গম কিছু গাছ রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ময়মনসিংহসহ কিছু প্রাচীন জমিদার বাড়িতে অন্যান্য পুরাতন বাড়িতে এ গাছটি দেখা যায়। এ গাছটি ভেষজ। নাগলিঙ্গম গাছ বেড়ে ওঠার জন্য যে পরিবেশ দরকার আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রাকৃতিক বনে সে পরিবেশ এখন আর নেই। দেশের প্রাকৃতিক বনে সুউচ্চ গাছপালা নেই বললেই চলে। আর পাশাপাশি সুউচ্চ গাছপালা না থাকলে নাগলিঙ্গম গাছ বেড়ে ওঠতে বা টিকে থাকতে পারে না।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, নাগলিঙ্গম গাছের রয়েছে ব্যাপক ঔষধি গুণ। এর ফুল, পাতা ও বাকলের নির্যাস  থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরি হয়। এন্টিবায়োটিক, এন্টিফাঙ্গাল, এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করা হয় এর নির্যাস। এই গাছ থেকে তৈরী ওষুধ পেটের পীড়া দূর করে। পাতার রস ত্বকের নানা সমস্যায় কাজ দেয়। ম্যালেরিয়া রোগ নিরাময়ে নাগলিঙ্গমের পাতার রস ব্যবহার হয়। আমেরিকার আমাজান অঞ্চল ও  ভেনিজুয়েলার আদিবাসীরা নাগলিঙ্গম ফলের খোসাকে এক সময় বাসন হিসেবে ব্যবহার করত বলে জানা যায়। এর কাঠ থেকে আসবাবও তৈরি হয়।


আরও খবর