সোনাইমুড়িতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধা নারীকে জবাই করে হত্যা রাতভর টানা বৃষ্টিতে সর্বোচ্চ রেকর্ড, নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ কুতুবদিয়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির ডিলার নিয়োগ সম্পন্ন কচুয়ায় মাঠের পানি থেকে শতবর্ষী বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার কুতুবদিয়া সরকারি কলেজে এইচএসসি ২০২৫ ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠান সম্পন্ন চিলমারীতে পানিতে পড়ে যুবকের মৃত্যু আদমদীঘিতে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী তিনজন নিহত ঝিনাইগাতীতে দেশীয় মাছ ধরার ৯৭৫ মিটার অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল আটক ও ধ্বংস ৭৫ বছরের পুরনো কলেজ, ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য লাইব্রেরিতে মাত্র ৪০টি আসন সুন্দরবন সংলগ্ন মালঞ্চ নদীর চরে বনায়ন তৈরিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ঝিনাইদহে অবৈধ স্থাপনা ও সড়ক থেকে দোকানপাট উচ্ছেদ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাচন নিয়ে সরকারের অফিসিয়াল নির্দেশনা পায়নি সেনাবাহিনী নাসিরনগরে মহানবী সা. এর শানে কটূক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ সিএনআরএসের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন কাদাকাটিতে হাত কোদালে খাল খনন চলছে, কাজের খবর জানেন না প্রকল্পের সভাপতি আশাশুনিতে উত্তরণের এক্সেস প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা ক্ষেতলালে বিডব্লিউবি বিতরণে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরায় সরকারি বন বিভাগের গাছ কেটে ভূমি দখলের অভিযোগ ইসলামপুরের সাপধরী ইউনিয়নে বিনামূল্যে স্যানিটারি ল্যাট্রিন সামগ্রী বিতরণ সাতক্ষীরায় বিশ্ব শিশুশ্রম উপলক্ষে আলোচনা সভা

শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসনের সাবেক এমপি আব্দুস শহীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি এবং অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ

সাতবারের সাবেক এমপি উপাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ আব্দুস শহীদ ১৯৯১ সালে মৌলভীবাজার-৪ আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই আসনে এরপর থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত তিনি টানা এমপি ছিলেন। সর্বশেষ নির্বাচনে তিনি কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

দীর্ঘ এসময়ে আব্দুস শহীদ ক্ষমতার দাপটে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি জমি দখল করে লাউয়াছড়া বনে চা বাগান, নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে জমি, বিভিন্ন ফ্ল্যাট এবং বাসা-বাড়ি ক্রয় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এ নেতার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ দীর্ঘদিন ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পাঁচ একর জমি অবৈধভাবে দখল করে সাবারী প্ল্যান্টেশন নামে চা-বাগান, লেবু বাগানসহ বিভিন্ন গাছগাছালী রোপণ করে ভোগ করে আসছিলেন। 

গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে ১৩১ জন শ্রমিক নিয়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের স্টুডেন্ট ডরমিটরির সামনে লাউয়াছড়ার জায়গা পুনরুদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং দীর্ঘদিনের দখলমুক্ত অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয়। 

বন বিভাগের জমি পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত জায়গায় লেবু গাছগুলো কেটে বন্যপ্রাণীর খাদ্য উপযোগী গাছের চারা রোপণ করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে চাপালিশ, বয়রা, অর্জুন, হরিতকি, জাম, বকুলসহ প্রায় দশ প্রজাতির পাঁচ হাজার গাছ। সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামিল মোহাম্মদ খান, রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘকাল ধরে অবৈধভাবে সাবেক সাতবারের এমপি আব্দুস শহীদ সরকারের পাঁচ একর জায়গা দখল করে রেখেছিলেন। ২০১৮ সাল থেকে বন বিভাগ বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ার কারণে তার লোকজনের বাধা সৃষ্টি করায় জমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের এক কর্মচারী বলেন, লাউয়াছড়ার জায়গাটি আমরা অনেক আগেই উদ্ধার করতে পারতাম; কিন্তু সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি ও নেতা হওয়ায় তাঁর ক্ষমতার দাপটে জমিটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। 

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত রোববার জায়গাটি দখলমুক্ত করা হয়। এখানে পাঁচ একরের বেশি জায়গা হবে। কিছু জায়গা লেবু গাছ ছিল, কিছু জায়গা ফাঁকা পড়ে ছিল। দখল করে লাগানো লেবুগাছ তুলে হরিতকি, বহেড়া, জাম ইত্যাদি বন্য প্রাণীর খাদ্য উপযোগী গাছের চারা রোপণ করা হয়। আব্দুস শহীদ ১৯৯১ সালে প্রথমবার মৌলভীবাজার-৪ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে এরপর ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে নির্বাচিত হন। ২০০৯- ২০১৪ পর্যন্ত তিনি জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, ২০০১- ২০০৬ পর্যন্ত সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ, এবং ১৯৯৬- ২০০১ পর্যন্ত জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। 

১৯৭৩ সালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ গণ মহাবিদ্যালয়ে যোগদান করে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন আব্দুস শহীদ। তিনি বঙ্গবন্ধু শিশু অ্যাকাডেমি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এবং আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি প্যানেল স্পিকার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

শুধু গত ৫ বছরে শহীদের সম্পদ বেড় বেড়েছে ১ কোটি : 

তথ্যানুসন্ধানো দেখা গেছে, ২০০৮ সালে সাবেক কৃষিমন্ত্রীর মোট স্থাবর, অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭০৭ টাকা, ২০১৮ সালে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল চার কোটি ৭৫ লাখ ১৮ হাজার ৫৩০ টাকা। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় হলফনামা থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে তার মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৬ কোটি ১৬ লাখ ৯২ হাজার ৬৪৮ টাকা।

নবম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আব্দুস শহীদের দাখিল করা হলফনামায় থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে শহীদের স্ত্রীর নামে মোট সম্পদ দেখানো হয়েছিল ৩১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৮৭ টাকা। ৫ বছরে সম্পদ বেড়েছে ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪২ টাকা। তবে স্ত্রীর কাছে কী পরিমাণ স্বর্ণ আছে তার পরিমাণ ও মূল্য অজানা বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

২০১৮ সালে স্থাবর সম্পদ ছিল এক কোটি ৫০ লাখ ১১ হাজার ১৫০ টাকা। বর্তমান হলফনামা অনুযায়ী স্থাবর সম্পদ কমে এক কোটি ৪০ লাখ ৪৮ হাজার ৬২৫ টাকা হয়েছে।

এদিকে ২০১৮ সালে তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল তিন কোটি ২৫ লাখ ৭ হাজার ৩৮০ টাকা। ২০২৩ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭৬ লাখ  ৪৪ হাজার ২৩ টাকা।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের খবর প্রকাশিত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে দুদক সাবেক এ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।

আরও খবর