গুচ্ছে নিকটস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ে করা যাবে প্রাথমিক ভর্তির নিশ্চয়ন, ভর্তি শুরু ২২জুন বরিশালে কিশোর গ্যাং বাহিনীর হামলা চার শিক্ষার্থী আহত, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দ্রুত ইসিকে জানান, সরকারের প্রতি সালাহউদ্দিন সাতক্ষীরা জেলা আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভায় অনুষ্টিত সুন্দরবনে প্রবেশে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা, অভাবে ধুঁকছে বনজীবিদের পরিবার সাতক্ষীরায় ২২ দিনেও সন্ধান মেলেনি ইটভাটা ব্যবসায়ীর ঢাকায় বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস গুম প্রতিরোধে এক মাসের মধ্যে আইন, গঠিত হচ্ছে শক্তিশালী কমিশন সাতক্ষীরায় জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সভা তাণ্ডবে পাইরেসির হানা ট্রাক মালিককে হয়রানির অভিযোগে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে মোংলায় বাস যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থেকে মুল্যবান কষ্টিপাথরের বিষ্ণু মূর্তিসহ ০২ জন গ্রেপ্তার নড়িয়ায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন জয়পুরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত-১, শিশুসহ আহত ৫ নোয়াখালীতে এসিড নিক্ষেপের ভয় দেখায় জোরপূর্বক দর্শন গ্রেপ্তার ১ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ইসরায়েলে নতুন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান কাছের মানুষকে আলিঙ্গন করা কেন জরুরি?

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে বজ্রপাত কেড়ে নিল দুইজনের প্রান


মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের কুসুমপুর নামক স্থানে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন দু'জন । স্থানীয়দের ধারণা, নিহতেরা হলেন লৌহজং উপজেলার তেউটিয়া ইউনিয়নের পাইকারা গ্রামের জুম্মন বেপারী ও কনকসার ইউনিয়নের কাউসার । আনুমানিক বেলা সাড়ে বারোটার দিকে আকাশ প্রচন্ড মেঘলা হয়ে বজ্রপাত হচ্ছিল, সাথে ছিল হালকা বৃষ্টি । এসময় তারা বজ্রপাত থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য রাস্তার পাশে একটি লাকড়ির ঘরের ছোট জায়গায় অবস্থান নেন । কিন্তু শেষ রক্ষা হলোনা, মারাত্মক ও বিকট আওয়াজের বজ্রপাতে প্রান গেল দুজনেরই ।  


প্রচন্ড তাপদাহের পর বৃষ্টিপাত প্রশান্তি না এনে বজ্রপাতের মতো আতঙ্ক নিয়ে এসেছে জনমনে । এবারও ঝড় বৃষ্টির মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয়েছে বজ্রপাত । বজ্রপাত কিংবা বজ্রসহ ঝড় সাধারণত বসন্ত এবং গ্রীষ্মের মাসগুলিতে বেশি ঘটলেও, সারা বছরে যেকোনো সময়ই তা ঘটতে পারে । পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত বজ্রপাতে ৩৪০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে । ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতে মারা গেছেন ২৭৪ জন । বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে গড়ে ১৬৫ জন মানুষের মৃত্যু হয় । কিন্তু বজ্রপাত প্রতিরোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছেনা । উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশের পূর্বের ছয়টি উপজেলায় একদিনে বজ্রপাতে ৯ জন প্রাণ হারান। এরপর ২৭ এপ্রিল একদিনে ছয় জেলায় আটজন প্রাণ হারিয়েছেন ।


ফিনল্যান্ড ভিত্তিক বজ্রপাত বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ভাইসালার তথ্য মতে, বাংলাদেশে বজ্রপাতে যারা মারা যান, তাদের ৭০ ভাগই কৃষক বা যারা খোলা মাঠে কাজ করেন । এছাড়াও বাড়ি ফেরার পথে ১৪ শতাংশ এবং গোসল ও মাছ ধরার সময় ১৩ শতাংশের বজ্রপাতের ফলে মৃত্যু হয়েছে । 


বিশ্লেষকদের মতে, শহরে বেশিরভাগ ভবনে বজ্রনিরোধক দণ্ড থাকার কারনে বজ্রপাতে মৃত্যু তেমন হয়না । কিন্তু গ্রামে তা না থাকা ও বড় গাছপালা কমে গিয়ে খোলা মাঠের কারণে সেখানে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি । তাছাড়া, বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় বজ্রপাত বেড়ে গেছে । এক ডিগ্রি উষ্ণতা বাড়লে ১২ শতাংশ বজ্রপাত বেড়ে যায়।


দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যানুযায়ী প্রতি বছর বাংলাদেশে গড়ে বজ্রপাতে কমবেশি ২৬৫ জনের মৃত্যু হয় । গত এক যুগে তিন হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন । ২০২১ সালে মারা গেছে ৩৬৩ জন, ২০২০ সালে ২৩৬ জন, ২০১৯ সালে ১৬৮ জন, ২০১৮ সালে ৩৫৯ জন, ২০১৭ সালে ৩০১ জন, ২০১৬ সালে ২০৫ জন এবং ২০১৫ সালে ১৬০ মারা গেছেন। প্রতি বছর মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।


সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের গবেষণা সেলের প্রধান আবদুল আলীম জানান, বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ দুইটি । বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গাছ বিশেষ করে মাঠের উঁচু গাছ কেটে ফেলা । হাওর অঞ্চলের মাঠে আগেও তেমন গাছ ছিল না । এখন অন্যান্য এলাকার গাছও কেটে ফেলা হয়েছে । ফলে মাঠে বা খোলা জায়গায় যে সব মানুষ থাকেন বজ্রপাতের এক কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিবাহী উঁচু জিনিস হিসেবে সেই মানুষকেই পায়। মানুষ না থাকলে মাঠের গবাদি পশু। ফলে মানুষ মারা যায়, গবাদি পশুও মারা যায়। সাধারণ গাছের তলায় আশ্রয় নিলে গাছের বিদ্যুৎ মানুষকে আক্রান্ত করবে এটাই স্বাভাবিক । বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে তার পরামর্শ হলো, "আকাশে কালো মেঘ দেখা দিলে বা ঝড় বৃষ্টি শুরুর সংকেত পাওয়া গেলে মানুষকে এমন কোনো স্থাপনায় আশ্রয় নিতে হবে যা বিদ্যুৎ কুপরিবাহী । কোনোভাবেই গাছের নিচে আশ্রয় নেয়া যাবেনা । কারণ গাছ বিদ্যুৎ পরিবাহী । গাছের নিচে আশ্রয় নিলে গাছের বিদ্যুৎ মানুষকে আক্রান্ত করবে।”


বাংলাদেশে বজ্রপাত প্রতিরোধ ও মানুষের জীবন বাঁচাতে সারাদেশে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এক কোটি তাল গাছের চারা রোপণের পরিকল্পনা হাতে নিলেও সারাদেশে ৩৮ লাখ চারা রোপণের পর দেখা যায় তা এক বছরের মধ্যেই অযত্নে অবহেলায় মারা যায় । এই পরিকল্পনা যথার্থ ছিলো না বলে মনে করেন আব্দুল আলীম । কারণ তালগাছ রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও এগুলো বড় হয়ে মানুষের চেয়ে উঁচু হতে ২০-৩০ বছর সময় লেগে যায় । তার মতে এখন প্রয়োজন হলো, ফাঁকা জায়গাগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র এবং টাওয়ার স্থাপন করা । টাওয়ারের উপরে লাইটিনিং প্রটেকশন সিস্টেম বসাতে হবে। এর দুইটি পদ্ধতি আছে লাইটিনিং অ্যারেস্টর ও এয়ার টার্মিনাল । অল্প সময়ে সহজ পদ্ধতি হলো বজ্র নিরোধক দন্ড । এগুলো বসাতে হবে । দীর্ঘ পরিকল্পনায় তাল গাছ, নারকেল গাছ লাগানো যেতে পারে ।

আরও খবর