মোঃ ফরমান উল্লাহ


পেঁচা বাংলাদেশে একটি পরিচিত পাখির নাম। অন্যান্য পাখির চেয়ে পেঁচার শারীরিক গঠন ভিন্ন। দেখতে একটু অদ্ভুত মনে হয়। হাঠাত কেউ পেঁচা দেখলে ভয়ে আঁতকে উঠতে পারে। প্রকৃতপক্ষে পেঁচাকে দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।


একটা সময় ছিল গভীর রাতে বসত ঘরের আশে-পাশে  গাছের ডালে পেঁচার ডাক শোনা যেতো। এখন আর পেঁচার ডাক শোনা যায় না। পেঁচা যখন রাতের আঁধারে নিম নিম করে ডাকতো তখন অনেকে ভয় পেয়ে যেতো। মানুষ ভাবত পেঁচা ডাকছে হয়তো কেউ মারা যেতে পারে। এটা এক প্রকারের কুসংস্কার।  কারণ পেঁচা ডাকলেই কেউ মারা যাবে এমন কোন যৌতিক তথ্য আজও পাওয়া যায় নি।


পেঁচাকে অনেকে অশুভ পাখি বলে থাকেন। প্রকৃতপক্ষে পেঁচা কোন অশুভ পাখি নয়। পেঁচাকে শুভ পাখি বলা যেতে পারে। কারণ পেঁচা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি থেকে বাংলাদেশের কৃষক বা কৃষি খাতকে অনেকাংশে রক্ষা করতে পারে। ইঁদুর বাংলাদেশের কৃষক এবং কৃষি খাতে অনেক ক্ষতি করে থাকে।  আর পেঁচার শিকারের মধ্যে প্রধান শিকার হলো ইঁদুর। পেঁচা ইঁদুরকে শিকার করে খাবার হিসাবে গ্রহণ করে কৃষি খাতকে ইঁদুরের আক্রন থেকে রক্ষা করে থাকে।


পেঁচার চোখ অম্যান্য পাখির চোখ থেকে আকারে বড়। পেঁচার দিনে চলাচল করে না। রাতে চলাচল করে বলে পেঁচাকে নিশাচর পাখিও বলা হয়ে থাকে। অনেকে মনে করেন পেঁচা অন্যায় কাজ কর্ম সহ্য করতে পারে না বলে রাতের আঁধারে চলা ফেরা করে। 


৮০ দশকের দিকে বড় গাছ এবং জঙ্গলে পেঁচা দেখা যেতো। সমাজের কতিপয় লোভি মানুষ কর্তৃক বড়বড় গাছ এনং বনাঞ্চল ধ্বংস করার ফলে পেঁচা প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখন আর আগের মত পেঁচা দেখা যায়।  নির্বিচারে বড় গাছ এনং বনাঞ্চল নিধন করা হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পেঁচা একটি অপরিচিত পাখি হবে পরিগনিত হবে। বাংলাদেশের কৃষি খাতকে ইঁদুরের আক্রমন থেকে বাঁচাতে পেঁচা সংরক্ষনে অভয়ারণ্য করা দরকার। 


জানা যায়, প্যালেস্টাই, জর্ডান ও ইসরাইলে জমির পাশে পেঁচার জন্য বাসা তৈরী করে রাখা হয় জমির ফসলকে ইঁদুরের হাত থেকে রক্ষা করতে।


অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ ছাড়া সকল মহাদেশে পেঁচা দেখতে পাওয়া যায়। পেঁচাকে অনেকে অশুভ পাখি মনে করেন। প্রকৃত পক্ষে পেঁচা অশুভ পাখি নয়। সনাতন ধর্মের লোকেরা পেঁচাকে দেবা লক্ষীর বাহন মনে করেন। 


পেঁচা নিজে বাসা তৈরী করতে পারে না। তারা অন্যের তৈরী করা বাসায় এবং বড় গাছের কুটরি ও বনজঙ্গলে বসাস করে। 


আসুন প্রকৃতির একটি অতি উপকারী প্রাণী হুতুম পেঁচাকে বাঁচাতে নির্বিচারে গাছ ও বনজঙ্গল নিধন রোধ করি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করি।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024