মিয়ানমার থেকে গোলাগুলির কারনে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকা সেন্টমার্টিনে খাদ্য পণ্য যাবে কক্সবাজার থেকে। আর রোগীসহ যেকোনো জরুরী যাতায়াত হবে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর থেকে।


বুধবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে দুটি বিশেষ নৌযানে করে খাদ্য পণ্য যাবে সেন্টমার্টিন।’


জরুরি যাত্রী যাতায়াত শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর নৌরুট দিয়ে হবে জানিয়ে ইয়ামিন বলেন, বিষয়টির সমন্বয় করবে টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। আর নৌপথে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেখবে কোস্টগার্ড।


উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নাফনদ পরিহার করার কথা বলছে জেলা প্রশাসন। সেইসাথে গোলাগুলির বিষয়ে মিয়ানমারকে অবহিত করা ও সামগ্রিক বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।



এদিকে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের মানুষ বন্দী হয়ে আছেন মাঝ সাগরে। পুরো দেশের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে দ্বীপের ১০ হাজার বাসিন্দা। এক সপ্তাহ ধরে মূল ভূখণ্ড টেকনাফের সাথে নৌপথে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। দ্বীপ থেকে নিয়মিত নৌপথে যাতায়াত করার চেষ্টা করা হলে মিয়ানমার থেকে ছুঁড়া হচ্ছে উপর্যুপরি গুলি।



দ্বীপের বাসিন্দারা টেকনাফ থেকে কাঁচামাল এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য এনে জীবনধারণ করে। এক সপ্তাহ নৌপথে কোন নৌযান চলাচল করতে না পারায় দ্বীপে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। একারণে পুরো দ্বীপবাসী আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে।


সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা সিরাজুদ্দৌলা দ্বীপ মুঠোফোনে জানান, এখানে আমরা এখন বন্দি হয়ে আছি। দ্বীপের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও নিরাপত্তা পাওয়া আমার অধিকার। আমার অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।


আরেক বাসিন্দা কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের বিচ কর্মীদের সুপারভাইজার জয়নাল আবেদীন বলেন, কষ্টের কথা কাকে বলবো, কোনকিছু তো সমাধান হচ্ছে না। সবজি একদম শেষ, কাঁচাবাজার সব শেষ, গ্যাস শেষের পথে। জিনিসপত্রের সংকট হওয়াতে সবকিছুর দাম এখন অনেক বাড়তি। এক সপ্তাহ ধরে যাতায়াত বন্ধ থাকায় আমরা সকলে আতঙ্কিত।


সেন্টমার্টিন স্পিডবোট ও লাইফবোট সময়বায় সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, আমাদের দ্বীপে দুর্ভোগ এখন চরমে। প্রশাসনকে অনুরোধ জানাবো এসব নিরসনে এগিয়ে আসার।


সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, টানা সাত দিন নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।


তবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এক বৈঠকে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান দাবি করেছেন, সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকটের অজুহাতে অধিক লাভের জন্য দাম বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024