দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ৯২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হন।


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে ৬৪ জনই গাজা সিটি ও উত্তর গাজার বাসিন্দা। নেতজারিম করিডোরে ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ অবস্থায় বাকি ১৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। 


ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার এক প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, রাত তখন আনুমানিক ১টা। ট্যাংক, যুদ্ধবিমান আর কোয়াডকপ্টার থেকে গোলা ও বোমা ছোড়া হয় আমাদের দিকে। তারা আমাদের দিকে গুলি করতে শুরু করে। পালানো ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না আমাদের।


গাজার আল শাতি শরণার্থী শিবিরে একটি অস্থায়ী তাঁবুতেও হামলা করেছে বর্বর ইসরায়েল বাহিনী। এ হামলায় ১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। 


চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬৯টি মৃতদেহ ও ২২১ জন আহতকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে আনা হয়েছে। 


গত ১৮ মার্চ মাসে ইসরায়েল গাজায় কঠোর অবরোধ আরোপ করার পর থেকে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানি প্রবেশ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত মাসে কিছু ত্রাণ ঢুকতে দেওয়া হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছে বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা।


অন্যদিকে, গাজার মিডিয়া অফিস আগেই জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা উত্তর গাজা অঞ্চলের এক হাজারেরও বেশি বাড়িঘর পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস করেছে। পাশাপাশি, ওই এলাকার ৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে গাজা সিটির দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যেখানে তাদের আশ্রয় দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামোই নেই।


এদিকে দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দুই মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।


জাতিসংঘের মতে, দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচার আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে অধিকাংশ অবকাঠামো। 


প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024