প্রকাশের সময়: 19-06-2025 11:12:11 am
বিশ্বখ্যাত শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইসই) প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৫’-এর তালিকায় এবারও জায়গা হয়নি মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি)।
বুধবার (১৮ জুন) প্রকাশিত এই তালিকায় বিশ্বের ১১৫টি দেশের দুই হাজারের বেশি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশের ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় স্থান পেলেও মাভাবিপ্রবি অনুপস্থিত রয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের উপস্থিতি:
এবারের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ৮টি সরকারি ও ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, যেটি বিশ্বের ১০১–২০০তম অবস্থানে রয়েছে এবং বাংলাদেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। এছাড়া আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (AIUB), ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (UIU) যৌথভাবে রয়েছে ৬০১–৮০০তম স্থানে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর আছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
কেন নেই মাভাবিপ্রবি?
টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিং জানা গেছে, ১৭টি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে র্যাঙ্কিংটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, নো পোভার্টি; জিরো হাঙ্গার; গুড হেলথ এন্ড ওয়েলবিং; কোয়ালিটি এডুকেশন; জেন্ডার ইকুয়ালিটি; ক্লিন ওয়াটার এন্ড স্যানিটেশন; অফ ডল এন্ড ক্লিন এনার্জি; ডিসেন্ট ওয়ার্ক অ্যান্ড ইকোনমিক গ্রোথ; ইন্ডাস্ট্রি ইনোভেশন এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার; রিকোয়ার্ড ইনেকুয়ালিটিস; সাসটেইনেবল সিটিজ এন্ড কমিউনিটিস; রেসপন্সিবল কনসামশান এন্ড প্রোডাকশন; ক্লাইমেট চেঞ্জ; লাইফ বিলোওয়াটার; লাইফ অন ল্যান্ড; পিস, জাস্টিস এণ্ড স্ট্রং ইন্সটিটিউশন্স ও পার্টনারশিপ ফর দ্যা গোলস। সংশ্লিষ্ট সূচকে পিছিয়ে থাকাই মাভাবিপ্রবির তালিকায় স্থান না পাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে মাভাবিপ্রবি গবেষণা সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল নাসির বলেন, “ আমাদের গবেষণা কার্যক্রমে বিনিয়োগ কম, গবেষণা অনুদান পর্যাপ্ত নয়, আন্তর্জাতিক প্রকল্প ও যৌথ গবেষণার অভাব রয়েছে। যা আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে প্রভাব ফেলে। আমাদের একটি বড় সীমাবদ্ধতা হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ ও শিক্ষকসংখ্যা কম। র্যাঙ্কিংয়ে যেতে হলে কমপক্ষে ৩৫টি বিভাগ এবং ৭০০ শিক্ষক প্রয়োজন। পাশাপাশি টানা ৫ বছর ধরে বছরে ৫০০টির বেশি ইনডেক্সড জার্নালে গবেষণা প্রকাশনার প্রয়োজন হয়।”
তিনি আরও বলেন, “মাভাবিপ্রবি থেকে অতীতে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত (ডেটা) প্রদান করা হয়নি। তবে বর্তমানে ‘র্যাঙ্কিং বিষয়ক কমিটি’ গঠন করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ডেটা সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে সময়মতো তা প্রদান করার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই আমরা ভালো করতে পারব।”
তবে অনেকেই মনে করেন, র্যাঙ্কিংয়ে স্থান না পাওয়া মানেই বিশ্ববিদ্যালয়টি অকার্যকর—এমনটা নয়। বরং এটি একটি চ্যালেঞ্জিং বার্তা, যা ভবিষ্যতে উন্নয়ন পরিকল্পনা ও গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
উন্নয়নের পথে অগ্রসর হওয়া জরুরি:
বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিং এখন আর শুধু কাগজে তালিকা নয়; এটি একটি প্রতিচ্ছবি, যা শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় কে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে তা বুঝতে সহায়ক। মাভাবিপ্রবির জন্য এটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় গবেষণা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।
বিশ্বমানের তালিকায় স্থান পেতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণায় বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা, শিল্পখাতের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ তৈরি এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলেই ভবিষ্যতে মাভাবিপ্রবি গ্লোবাল র্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা ও সংশ্লিষ্টরা।
৬ ঘন্টা ৫ মিনিট আগে
১৭ ঘন্টা ১৭ মিনিট আগে
২১ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে
১ দিন ২ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
১ দিন ২২ ঘন্টা ৫২ মিনিট আগে
২ দিন ১৫ মিনিট আগে
২ দিন ৩১ মিনিট আগে
২ দিন ২১ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে