গলাচিপায়-অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জেলা-উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ নগদ অর্থ বিতরণ। সুন্দরবনের ৬০০ হরিণ শিকারের ফাঁদ উদ্ধার ব্রহ্মরাজপুর বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুর রশীদের বিরুদ্ধে সরকারী জমিতে অবৈধভাবে আরসিসি পিলার নির্মাণ করে ছাদ ঢালাইয়ের অভিযোগ কালিগঞ্জের প্রবাসী শ্রমিক শোকর আলী হাতে খেজুর চাষে নতুন দিগন্ত রংপুরে আমীরে জামায়াত ড. শফিকুর রহমানের আগমন উপলক্ষ্যে পীরগাছায় প্রস্তুতি সভা শ্রীপুরে এটিএম বুথে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ, নিরাপত্তাকর্মী পলাতক। লালপুরে পদ্মার চরে চীনা বাদামের বাম্পার ফলন পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী বৈঠক সম্পন্ন চাটখিলের কৃতি সন্তান টিপুর রেইনহ্যামে ক্রিকেট গল্প ডোমারে ইউএনআইপি'র বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত ডোমারে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল সিলগালা, গ্রেপ্তার-৩ আশাশুনিতে মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়াড়ি খোকন গাঁজাসহ গ্রেফতার মোংলা বন্দরে আসলো ভারত থেকে দুই জাহাজ চাল কালিগঞ্জে গৃহবধূর জমি দখলের অভিযোগ, নিরাপত্তাহীনতায় এক পরিবার লালপুরে আ.লীগ নেতা মঞ্জু হত্যার প্রধান আসামি টুমণ গ্রেফতার। গুচ্ছে নিকটস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ে করা যাবে প্রাথমিক ভর্তির নিশ্চয়ন, ভর্তি শুরু ২২জুন বরিশালে কিশোর গ্যাং বাহিনীর হামলা চার শিক্ষার্থী আহত, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দ্রুত ইসিকে জানান, সরকারের প্রতি সালাহউদ্দিন সাতক্ষীরা জেলা আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভায় অনুষ্টিত সুন্দরবনে প্রবেশে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা, অভাবে ধুঁকছে বনজীবিদের পরিবার

কৃষক মনিরের কৃষি খামারে আলু গাছে টমেটোর জোড় কলম

আলু গাছে টমেটোর জোড় কলম করে আলোঢ়ন সৃষ্টি করেছে কৃষক মনির। কৃষক মনিরের বাড়ি  রাজশাহী শহরে হলেও গোদাগাড়ীর কৃষক হিসাবে তাকে সবাই চিনে। গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুর গ্রামে মনিরের কৃষি খামার। সে তার খামারে নতুন নতুন পদ্ধতির ব্যাবহার ও নতুন নতুন ফসল চাষবাদ করে। তার চাষবাদ দেখে নতুন নতুন চাষবাদে আগ্রহী হয়ে উঠে এ অঞ্চলের কৃষকরা। এবার সে খামারে জোড় কলম পদ্ধতি ব্যাবহার করে ৪০ টি আলু গাছে তেরী করেছে টমেটোর গাছ। আলুর গাছে টমেটোর গাছ তৈরী করে রিতীমতো আলোঢ়ন সৃষ্টি করেছে কৃষক মনির। দুরদুরান্ত থেকে তার এই জোড় কলম পদ্ধতির টমেটোর গাছ দেখতে আসছে কৃষকরা। শুধু তাই নয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীরা আসছে তার কৃষি খামারে আলু গাছে তৈরী করা টমেটোর গাছ দেখতে ও শিখতে।

টমেটো এবং আলু উভয়ই একই গোত্রের মানে (হরমযঃংযধফবং) দীর্ঘ রাত্রির উদ্ভিদ এ কারনে এদের মধ্যে জোড় কলম পদ্ধতি বেশ কার্যকর। উভয় গাছেই থাকে আল্কালয়েড নামক একপ্রকার উপাদান যা তাদের পোকামাকড় থেকে রক্ষা করে। 

জোড় কলমের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটা সময় এবং স্থান সাশ্রয়ী । একই গাছে আলু এবং টমেটো উৎপাদনের ফলে অর্থনৈতিক ভাবে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব।

আলু এবং টমেটো একই গাছে উৎপাদন করার ধারনা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৭ সালে ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট এ। যুক্তরাজ্যের গবেষকরা সম্প্রতি এই ধারণার সফল বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন। তারা একই গাছে উপরে টমেটো আর নিচে আলু ফলাতে সক্ষম হয়েছেন যাতে আলু ও টমেটোর স্বাদ অক্ষুন্ন থাকে। এই  কাজের জন্য তারা জিন প্রকৌশল নয়, গ্রাফটিং বা জোড় কলমের আশ্রয় নিয়েছেন। টমেটোর সঙ্গে আলুর জোড় কলম পদ্ধতিতে আলু ও টমেটো একই গাছে উৎপাদন করা সম্ভব ।

একটি প্রাপ্তবয়স্ক আলু গাছকে (যাকে স্টক বলা হয়) মাটি থেকে প্রায় ১ ইঞ্চি উপরে ভি শেপ করে কেটে নিয়ে উপরের অংশটি ফেলে দিতে হবে।

অন্যদিকে একটি টমেটো গাছকে (যাকে সায়ান বলা হয়) মাটি থেকে ৬ থেকে ৭ ইঞ্চি কেটে আগাসহ উপরের অংশটি কেটে নিতে হবে। এ কাজের জন্য আলু গাছের সমান ব্যাস বিশিষ্ট টমেটো গাছ নিলে গ্রাফটিং বা জোড় কলম করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হয়। তারপর টমেটো গাছের কাটা অংশটি  আলু গাছের কাটা অংশটির উপর প্রতিস্থাপন কড়তে হবে। একে বলা হয় গ্রাফটিং বা জোড় কলম। গ্রাফটিং করা অংশটি গ্রাফটিং রেপিং টেপ দিয়ে ভালোভাবে পেঁচিয়ে দিতে হবে। প্রতিস্থাপিত অংশ থেকে নতুন পাতা গজানোর আগপর্যন্ত রেপিং টেপ খোলা যাবেনা।

কৃষক মনিরের খামারে গিয়ে কথা হয় তার সাথে। সে বলেন টিভিতে আলু গাছে জোড় কলম পদ্ধতিতে টমেটোর গাছ তৈরী করা দেখে সে পরীক্ষা মুলক ভাবে ৪০ টি আলু গাছে জোড় কলম পদ্ধতিতে টমেটো গাছ তৈরী করেছে। এতে সে সফল হয়েছে। 

সে আরো বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলা টমেটোর জন্য সারা বাংলাদেশে বিখ্যাত। দেশের সিংগভাগ টমেটো উৎপাদন হয় এ উপজেলায়। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে কৃষকেরা টমেটোর তেমন দাম পাই না। তাই এ উপজেলার কৃষকরা টমেটোর ক্ষেত থেকে ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত টমেটো সংগ্রহ করে। তারপর টমেটোর গাছ কেটে বোরো ধানের আবাদ করে। জানুয়ারী মাসের মাঝামাঝিতে এ উপজেলায় আর টমেটো পাওয়া যায় না। এপ্রিল মে মাসে টমেটোর আবার বাজার মূল্য বৃদ্ধি পাই। তাই এপ্রিল মে মাসে টমেটোর বাজার ধরার জন্য অল্প পরিসারে হলেও এ পদ্ধতিকে কাজে লাগাতে চান সে।

মনির বলেন, আলু গাছ ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা হলেই আলু গাছে টমেটোর জোড় কলম ভাল হচ্ছে। আলু গাছ বেশী বড় হলে জোড় কলম ভালো হচ্ছে না। জোড় কলম করার ৪ থেকে ৫ দিনের মাথায় টমেটোর কান্ড থেকে কুশি ছাড়তে শুরু করে। পতা সজিব ও সতেজ হলে পলিথিনের ব্যাগ খুলে ফেলতে হয়। পলেথিন ব্যাগ খুলতে সময় লাগে ৭ থেকে ১০ দিন। জোড় কলম করার ১৫ দিনের মাথায় টমেটোর ফুল আসতে শুরু করে। ১ থেকে দেড় মাসের মাথায় ফল টমেটোর গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা যায়।  

সে আরো বলেন, এ পদ্ধতি ব্যাবহার করে মাটির নিচে আলু এবং মাটির উপরে টমেটো। একই গাছ থেকে দুই রকম সবজি পাওয়া যাবে। এমনকি ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস টমেটো পাওয়া যাবে। কারন আলু লাগানোর পর ক্ষেত থেকে আলু তুলতে সময় লাগে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস। 

এ পদ্ধতিতে টমেটোর গাছ আরো বৃদ্ধি করবেন কি না প্রশ্নের জবাবে কৃষক মনির বলেন, এবার পরীক্ষা মুলক ৪০ টি আলু গাছে টমেটোর জোড় কলম করেছি। আর বৃদ্ধি করার ইচ্ছে  নেই। তবে সে বলেন, এর আগে তীত বেগুন গাছে টমেটোর জোড় কলম করে সফল হয়েছি। এবার মার্চ মাসে প্রায় ৪০০ টি তীত বেগুন গাছের সাথে টমেটোর জোড় কলম পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে টমেটোর আবাদ করবো। এতে করে অসময়ে টমেটো পাওয়া যাবে এবং দামও ভালো পাবো।


Tag
আরও খবর